Home Third Lead চাঁদপুরের আড়তে আসছে প্রতিদিন ৬০০ মণ ইলিশ

চাঁদপুরের আড়তে আসছে প্রতিদিন ৬০০ মণ ইলিশ

শওকত আলী, চাঁদপুর থেকে: ইলিশের রাজধানী খ্যাত চাঁদপুরের অর্ধ শতাধিক আড়ৎ এখন সরগরম। কয়েক সপ্তাহ আড়ৎগুলো নিরব থাকার পর আবার ব্যবসায়ী,ক্রেতা-বিক্রেতা ও শ্রমিকদের আসা যাওয়ায় জমজমাট হয়ে উঠেছে।

পাইকারি আড়তদার ও খুচরা বিক্রেতারা ব্যস্ততম সময় পার করছেন। বড় ট্রলার ও ট্রাকে করে সকাল থেকেই ইলিশ আসছে শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটে।  দাম আগের চাইতে কিছুটা কমেছে। আড়ৎ এখন  মাছে ভরপুর আড়তগুলো।

সোমবার দুপুরে চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় ইলিশের পাইকারী বাজার ঘুরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ে। সাগরের ইলিশগুলো অধিকাংশ ট্রলারে করে ঘাটে আসছে এবং নোয়াখালী জেলার হাতিয়া অঞ্চলের ইলিশগুলো আসছে সড়ক পথে ট্রাকে করে চাঁদপুর আড়তে।

মাছঘাটের প্রায় ৫০টির অধিক আড়ৎ। প্রত্যেক আড়তের সামনে বড় বড় সাইজের ইলিশের স্তুপ। গত ৩-৪ বছর এত বড় সাইজের ইলিশ আমদানি হয়নি বলে ব্যবসায়ীরা জানান।  বড় সাইজের ইলিশ বেশী আমদানি হচ্ছে এ বছর। বিশেষ করে ২ কেজি থেকে ৩ কেজি ওজনের ইলিশ বেশী আসছে। ছোট সাইজের ইলিশ খুবই কম দেখা মিলে।

গত কয়েকদিন যাবত সাগর থেকে ৪/৫টি ইলিশের ট্রলার চাঁদপুর মৎস্য আড়তের পাশেই অবতরন কেন্দ্রে আসছে। প্রতিটি ট্রলারে ১০০ থেকে ১৫০ মণ ইলিশ আসছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন,গত বছর ইলিশের এ সময়কার মৌসুমে আরো বেশী ইলিশ ও চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ইলিশ আমদানী ছিল। এ বছর সে তুলনায় অনেক কম ইলিশ আমদানী হচ্ছে। তবে এ ভাবে পুরো মৌসুমে আমদানী থাকলে ব্যবসায়ীরা তাদের বিগত লোকসান কাটিয়ে লাভের মূখ দেখবে। আর যদি কয়েকদিন পর ইলিশ আমদানী আবার কমে যায় তবে লোকসান গুণতে হবে।

চাঁদপুর নৌ-সীমানায় পদ্মা-মেঘনা নদীর ইলিশ কম পাওয়ার বিষয়ে চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউটের প্রধান ইলিশ গবেষক ড. আমিনুল ইসলাম বলেন, যেসব এলাকায় ইলিশ পাওয়ায় যায়, সেখানে ইলিশের প্রাপ্যতা হ্রাসের বেশ কিছু কারণ আছে। এ মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে-নদীতে পানি প্রবাহ হ্রাস,  দেশের বৃষ্টির পরিমাণ কম, নদীতে যে আবাসস্থল রয়েছে তাতে পরিবেশগত বিপর্যয় অনেকাংশ দায়ী বলা যায়। এ ছাড়া নদীর বিভিন্ন স্থানে ডুবুচর জেগে উঠাও একটি বড় কারন। নদীর যে পরিমান সমস্যা দেখা যায় সেসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারলে আবারো পুরানো দিনের মত বিগত বছরগুলোর মত জেলেরা অবশ্যই তাদের কাংখিত ইলিশ পাবে প্রচুর পরিমানে ।

এ বিষয়ে চাঁদপুর মৎস্য বনিক সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল বারি জমাদার বলেন,এ বছর প্রাকৃতিক কারনে ইলিশ আমদানী কম। কেননা এ সময় তেমন বৃস্টি হয়নি। এ বছর ২মাস পাড় হয়ে গেছে ইলিশের ভর মৌসুম। এতদিন আমরা ইলিশ শূন্য অবস্থায় ছিলাম। বিগত বছর প্রতিদিন ইলিশ মৌসুমে ৭শ’থেকে ৮শ’মন ইলিশ আমদানী হতো। সেই তুলনায় এ বছর কম আমদানী হচ্ছে। এখন গড়ে ৪শ’মনের মত ইলিশ দক্ষিন অঞ্চল থেকে আসছে। এ ভাবে আমদানী হলে ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও পোষাতে পারবে। আর যদি আমদানী কমে যায় তা’হলে সকল ব্যবসায়ীরা লোকসান গুনতে হবে। আমদানী তুলনামূলক কম হওয়ায় দাম তেমন কমেনি। তবে বিগত দিনের চাইতে কিছুটা হলেও কমেছে। তবে আমদানী বাড়লে ইলিশের দাম আরো কমে যাবে।