বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ওসমানীনগর (সিলেট): ওসমানীনগরে এক প্রবাসীর বাড়িতে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সংঘবদ্ধ হামলার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আহবাব হোসেন ওরফে আহবাবুলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে উপজেলার উমরপুর ইউনিয়নের খাদিমপুর গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয়।
ঘটনার শিকার যুক্তরাজ্য প্রবাসী গোলাম রব্বানী সোহেলের বাড়িতে চালানো এই হামলায় ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। লুট হওয়া ও ক্ষতিগ্রস্ত মালামালের মূল্য প্রায় ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা বলে দাবি করা হয়েছে। হামলাকারীরা বাড়ির গেটের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আসবাবপত্র, মিশুক রিকশা, থাই গ্লাস, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা লুট করে।
বাড়ির মালিক ডলি বেগম (৫৩) এ ঘটনায় শুক্রবার ওসমানীনগর থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা (নং ০৪) দায়ের করেন। মামলায় ২১ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৪০ থেকে ৪৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে খাদিমপুর গ্রামের জিতু মিয়া (৫২), শানুদ আলী (৫৮), জিতু মিয়া (৩০) ও আখলাক মিয়াকে (৪৭) গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৫১ ধারায় আরও ১১ জনকে আটক করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, হামলার পেছনে থাকা উত্তেজনার সূত্রপাত হয় একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে। ওই ভিডিওতে আহবাবুলের পিতা চেরাগ আলীসহ কয়েকজনকে জুয়া খেলতে দেখা যায়, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে প্রবাসী গোলাম রব্বানী সোহেলকে দায়ী করে আহবাবুল। এরপর বৃহস্পতিবার বিকালে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
ডলি বেগম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু হামলাকারীরা পুনরায় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে আরও লোক জড়ো করে পুলিশের ওপর চড়াও হয়। পরিস্থিতি বেসামাল হলে সিলেট থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে তা নিয়ন্ত্রণে আনেন।
অভিযুক্ত আহবাব হোসেন আহবাবুল বলেন, “আমার নেতৃত্বে কোন হামলা হয়নি। গ্রামের মানুষ নিজেরাই ক্ষুব্ধ হয়ে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়েছে। আমি শুধু তাদের সাথে ছিলাম। আর আমার বাবা জুয়া খেলেননি, এটা কল খেলার একটি ভিডিও ছিল।”
অন্যদিকে, প্রবাসী গোলাম রব্বানী সোহেল বলেন, “আমার ভাইয়ের স্ত্রী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আমি প্রশাসনের কাছে সন্ত্রাসী হামলার বিচার চাই।”
উপজেলা যুবদলের সভাপতি ফজল আহমদ জনি এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এই ঘটনায় যুবদল বা বিএনপি দায়ী নয়। এটি আহবাবুলের ব্যক্তিগত কাজ, আমাদের দলে চাঁদাবাজ বা দখলদারের জায়গা নেই।”
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মোনায়েম মিয়া জানান, “পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। মামলা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”