দিল্লি: ভারতের অভ্যন্তরে অর্থনীতির বিকাশ কমেছে ঠিকই কিন্তু উদ্বেগের কিছু নেই। শুক্রবার এমনই আশ্বাস দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ফিনান্সিয়াল স্টেবিলিটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, আর্থিক বিকাশের গতি ধীর হতে পারে কিন্তু তার স্থিতিশীলতা বজায় আছে।
গত ছয় বছরের মধ্যে মোট জাতীয় উৎপাদনের বৃদ্ধির হার এখন সবচেয়ে কম। চলতি আর্থিক বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বিকাশের হার ছিল মাত্র ৪.৫ শতাংশ। অর্থনীতিবিদদের মতে, ২০১৯–২০ সালে সামগ্রিকভাবে জিডিপি–র বৃদ্ধির হার পাঁচ শতাংশের বেশি হবে না।
প্রতি দু’বছরে একবার ফিনান্সিয়াল স্টেবিলিটি রিপোর্ট প্রকাশ করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তাতে বলা হয়েছে অর্থনীতির বিকাশ দ্রুত হবে দু’টি ইঞ্জিনের ওপরে ভিত্তি করে। একটি ইঞ্জিন হল পণ্যের বিক্রি বৃদ্ধি পাওয়া, অপরটি হল বিনিয়োগ। আন্তর্জাতিক টাকার বাজারের অস্থিতিশীলতা যাতে আমাদের দেশে প্রভাব না ফেলে তাও দেখতে হবে।
এর পরে বলা হয়েছে, অর্থনীতিতে মন্দা ভাব দেখা দেওয়ার জন্য অনেকেই ঋণ নিতে চাইছেন না। অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ অবশ্য কমেছে। কিন্তু ব্যাঙ্কগুলির হাল আরও ভাল হওয়া চাই। যা পরিস্থিতি তাতে ব্যাংকের অনাদায়ি ঋণের বোঝা আগামী এক বছরে বাড়তে পারে। এমন আশংকার কথা জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক ৷ সেক্ষেত্রে তা ২০২০–র সেপ্টেম্বর মাসে ৯.৯ শতাংশে পৌঁছবে। পাশাপাশি মূল্যায়নকারী সংস্থা ইক্রা–র আশংকা, ব্যাংকের ঋণের বৃদ্ধির হার ৫৮ বছরের রেকর্ড ভেঙে তলানিতে নামতে যাচ্ছে।
রিজার্ভ ব্যাংকের মতে, অর্থনীতির সার্বিক যা পরিস্থিতি, তাতে ঋণের বৃদ্ধি কমে যাওয়ার ধাক্কায় ব্যাংকগুলির অনাদায়ি ঋণ বা এনপিএ ২০২০–র সেপ্টেম্বরে ৯.৯ শতাংশে পৌঁছবে । যেখানে ২০১৯–এর সেপ্টেম্বরে ছিল ৯.৩ শতাংশ। অর্থ মন্ত্রকের মতোই আর্থিক বিশেষজ্ঞদের আশংকা, এর জেরে শেয়ার বাজারেও ধস নামতে পারে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর এইচ আর খানের অভিমত, ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি না পেলে এটাই স্বাভাবিক যে অনুৎপাদক সম্পদের হার বাড়বে। রিজার্ভ ব্যাংক জানিয়েছে, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলির অবস্থা মোটেই ভাল নয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় এ বারের সেপ্টেম্বরে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির হারও কমের দিকে, মাত্র ৮.৭ শতাংশ।