বাংলাদেশের শেয়ারবাজার থেকে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে শুরু করেছেন। এই জন্য তারা দু’টি কারণের কথাই বলছেন মোটা দাগে। এর মধ্যে রয়েছে অব্যাহত দরপতন ও টাকার অবমূল্যায়ন। অর্থনীতিবিদরা অবশ্য বলছেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় সুশাসন না থাকায় দরপতন ঠেকানো যাচ্ছে না। পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারীরা অনেকটা দিশেহারা। অনেকে লোকসান দিয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।
২০১৮ সন থেকেই বিদেশী বিনিয়োগকারীরা পুঁজি বাজার থেকে তাদের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করতে শুরু করেছেন। গত ৮ মাসে তারা ৩ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা সাধারণত ডলারে বিনিয়োগ করে থাকেন। একইভাবে মুনাফাও নিয়ে যান ডলারে। ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বলছে, ২০১৮ সনের জানুয়ারি থেকে এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত টাকার অবমূল্যায়ন হয়েছে ৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ। সে সময় ডলারের দাম ছিল ৮২ টাকা ৮২ পয়সা। চলতি বছরের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এসে দাঁড়িয়েছে ৮৫ টাকা ৭৫ পয়সা। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ২২ মাসে বিদেশীরা মাত্র ৫ মাস শেয়ার কিনেছেন। বাকি ১৭ মাস তারা শেয়ার বিক্রিতেই ব্যস্ত ছিলেন।
শেয়ারবাজার নিয়ে গবেষণা করেন অর্থনীতিবিদ ড. গোলাম মোয়াজ্জেম। তার মতে, টাকার অবমূল্যায়ন বড় কারণ নয়। অন্যতম কারণ হচ্ছে, সুশাসনের অনুপস্থিতি। বাজার মনিটরিংয়ে দুর্বলতা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বিদেশী বিনিয়োগকারীরা খুব হিসেবী। তারা মৌল ভিত্তির কোম্পানি ছাড়া বিনিয়োগ করতে চান না। ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের প্রসিডেন্ট শাকিল রিজভী বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যখন বিনিয়োগ করেন তখন সবাই তাদের অনুসরণ করে। আবার তারা যখন বাজার থেকে বেরিয়ে যান তখন অন্য বিনিয়োগকারীরাও তাদের পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দেন। তবে এটা ঠিক, টাকার অবমূল্যায়নের কারণে তারা শেয়ার কেনার চেয়ে বেশি বিক্রি করছেন। উল্লেখ্য যে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশ, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও চীনের বিনিয়োগ রয়েছে। খবর ভয়ে স অব আমেরিকা।