আজ ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালের এই দিনে খুনিরা পরিকল্পিকভাবে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার টার্গেট নিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার বঙ্গবন্ধুর এভিনিউর সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল।
আজ গ্রেনেড হামলার ১৯ বছর পূর্ণ হলো। দেশের ইতিহাসে রাজনৈতিক সমাবেশে ভয়াবহ হামলার ঘটনায় করা মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হলেও রায়ের ডেথ রেফারেন্স শুনানি হয়নি। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে এখনও বিভিন্ন দেশে আত্মগোপনে থাকা ১৬ আসামিকে দেশে ফেরত আনা যায়নি। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, খুব শ্রীগ্রই মামলার ডেথ রেফারেন্স শুনানি শুরু হবে। রাষ্ট্রপক্ষের আশা বিচারিক আদালতে যে রায় দেয়া হয়েছে উচ্চ আদালতের শুনানিতে সে রায় বলবৎ থাকবে।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় এই হামলায় ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ তিন শতাধিক। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ইন্ধনে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি) ওই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দ্বিতীয় দফায় অধিকতর তদন্তে বেরিয়ে আসে হামলার নেপথ্যের নীলনকশা। ঘটনার পর দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের দুই মামলার রায় একইসঙ্গে ঘোষণা করা হয়। হত্যা মামলায় ১৯ জনকে ফাঁসির দণ্ড, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। আর বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় ১৯ জনকে ফাঁসি এবং ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। এই ৩৮ জনকে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের অন্য ধারায় ২০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। দুই মামলায় আলাদাভাবে সাজা দেয়া হলেও তা একযোগে কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। মামলার মোট আসামি ৫২ জন হলেও তিন আসামির অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদের মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়। তবে মামলা দু’টি রায়ের পর আসামি পক্ষের আইনজীবীরা হাইকোর্টের আপিল বিভাগের ডিভিশন বিভাগে আপিলও করেছে।
পলাতক আসামিদের ফেরানো যায়নি
এদিকে চাঞ্চল্যকর এ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ১৬ জন এখনও পালিয়ে আছে। এসব আসামি বিভিন্ন দেশে আত্মগোপনে থাকলেও তাদের দেশে ফেরানো যায়নি।
পলাতক কয়েকজনের অবস্থান চিহ্নিত করে আইনি প্রক্রিয়ায় দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। আর তারেক রহমানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের দি এক্সট্রাডিশন অ্যাক্ট (বন্দি বিনিময় প্রত্যাবর্তন আইন)-২০০৩ অনুযায়ী, তাদের সঙ্গে যে দেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি আছে, শুধু সে দেশের সঙ্গে বন্দি বিনিময় করতে পারবে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের এ ধরনের কোন চুক্তি নেই। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষে আইনগতভাবে তারেক রহমানকে ফেরত আনা সম্ভব নয়। তাহলে বিকল্প কোন উপায়ে তারেককে দেশে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা আছে কিনা? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রত্যর্পণ চুক্তি ছাড়াও দাগি আসামিকে এক দেশ আরেক দেশে হস্তান্তর করে। এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক আসামিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। যেহেতু যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আমাদের প্রত্যর্র্পণ চুক্তি নেই সেহেতু বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ চুক্তির মাধ্যমে আসামিদের ফেরত আনার চেষ্টা চলছে। যেটাকে মিউচ্যুয়ার লিগ্যাল এগ্রিমেন্ট বলা হয়।
পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) সূত্রে জানা যায়, পলাতক কয়েকজনের সম্ভাব্য অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মাওলানা তাজউদ্দিন দক্ষিণ আফ্রিকায় বা পাকিস্তানে। হারিছ চৌধুরী ভারত বা মালয়েশিয়ায় (জনশ্রুতি রয়েছে তিনি মারা গেছেন)। রাতুল ইতালি বা মালয়েশিয়া। পলাতক ১৬ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে তারেক রহমান ও কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের বিরুদ্ধে জারিকৃত রেড নোটিশ ইন্টারপোল প্রত্যাহার করেছে। তারেকের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল রেড এলার্ট জারি করা হয়। পরের বছরের ২৬ জানুয়ারি ইন্টারপোল জারিকৃত রেড নোটিশ প্রত্যাহার করে। পরে বাংলাদেশ পুলিশের তরফ থেকে ইন্টারপোল কোন ভিত্তিতে রেড নোটিশ প্রত্যাহার করেছে তার ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারপোল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইন্টারপোলের আর্টিকেল-৩ অনুযায়ী তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক, ধর্মীয়, জাতীগত ও মিলিটারি কারণে কারো বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করলে তা প্রত্যাহার করা হয়।
ইন্টারপোল কর্তৃপক্ষ উত্তরে জানিয়েছে, রাজনৈতিকভাবে তারেক ও কায়কোবাদকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এই রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে বলে তাদের কাছে মনে হয়েছে। তাই তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারেক একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, তার বিরুদ্ধে জারি করা রেড নোটিশ রাজনৈতিকভাবে নয়-এমন যুক্তি দেখিয়ে কাউন্টার জবাবও দিয়েছিল ইন্টারপোলের বাংলাদেশ শাখা। কিন্তু এতে কোন লাভ হয়নি। তাই আরেক মামলায় তারেকের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করার চিন্তা করছে এনসিবি। সেটি ডিএমপি’র মানি লন্ডারিং আইনে দায়ের করা মামলা।
পুলিশ হেডকোয়াটার্সের ইন্টারপোল শাখা থেকে জানা গেছে, অভিযুক্ত তারেক রহমান ও কায়কোবাদের বিষয়ে রেড নোটিশ জারি করা হলেও তারা বিদেশে বসে লবিস্ট নিয়োগ করে রেড নোটিশ প্রত্যাহার করেছে। তবে যথাযথ কাগজপত্র দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আবারও রেড নোটিশ জারি করা হবে। আমরা ইন্টারপোলকে বুঝানোর চেষ্টা করছি, তারেক ও কায়কোবাদকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে এই নোটিশ জারি করা হয়নি। এবার ব্যারিস্টার সমপর্যায়ের অথবা ল’ ফর্ম দিয়ে তথ্যপ্রমাণাদি করানো হবে। এ জন্য গ্রেনেড হামলা মামলা যেসব ইউনিট তদন্ত করেছে তাদের কাছে তথ্যপ্রমাণাদি চেয়ে চিঠিও দেয়া হয়েছে। পলাতক বাকি ১০ জনের বিরুদ্ধেও রেড নোটিশ জারি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে যেসব দেশের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি নেই সেই ক্ষেত্রে দুই দেশের প্রতিনিধিত্ব বা প্রতিনিধির মাধ্যমে আসামিদের আনা সম্ভব বলে জানান তিনি।
পলাতক আসামিদের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও খোঁজ-খবর রাখছে। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যাদের অবস্থান এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি, তাদের চিহ্নিত করতে কাজ করা হচ্ছে। কে কোন দেশে অবস্থান করছে, তা নিশ্চিত হতে গোয়েন্দাসহ একাধিক ইউনিট কাজ করছে। দূতাবাসগুলোকে এ বিষয়ে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।
মামলার বর্তমান পরিস্থিতি :
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও হত্যা মামলার স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মো. আবু আবদুল্লাহ ভুঁঞা বলেন, করোনার মধ্যেও গত বছর জুলাই মাসে গ্রেনেড হামলা মামলার পেপারবুক (মামলার রায়ের কপি, এফআইআরসহ যাবতীয় নথি) সরকারি ছাপাখানা থেকে প্রস্তুত হয়ে হাইকোর্টে পেঁঁঁৗঁছেছে। এর ফলে মামলাটির ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানির পথ খুলল। এখন মামলাটি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি একটি বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেবেন। আমাদের দাবি, এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি হোক।
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেছেন, ইতিহাসের জঘন্যতম ভয়াবহ বর্বরোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করা হয়েছে।
এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা রাষ্ট্রীয় জীবনে খুবই গুরুত্ব পূর্ণ মামলা। নজিরবিহীন ওই হামলার মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে স্থবির ও ধ্বংসের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। সে কারণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমরা মামলাটি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি বরাবর দরখাস্ত করেছি। প্রধান বিচারপতি মামলাটি শুনানির জন্য একটি বেঞ্চ ঠিক করে দিবেন। এটর্নি জেনারেল বলেন, মৃত্যুদণ্ডাদেশ নিশ্চিত করার জন্য বিচারিক আদালত থেকে যে রেফারেন্সগুলো হাইকোর্টে আসে তা শুনানির জন্য প্রস্তুত হলে প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ ঠিক করে দেন। সে অনুযায়ী শুনানি হয়।
এটর্নি জেনারেল আশা প্রকাশ করে বলেন, শীঘ্রই রাষ্ট্রীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ এ মামলার শুনানি হাইকোর্টে শুরু হবে। মামলায় বিচারিক আদালতে আসামিদের যে সাজা হয়েছে তা বহাল রাখতে হাইকোর্ট শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ আইনগত দিক তুলে ধরবে।
সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র জানান, হত্যা মামলায় ১৩ ভলিউমে মোট ৫৮৫টি পেপারবুক এসেছে, যা সাড়ে ১০ হাজার পৃষ্ঠার। এতে মোট আপিল ২২টি এবং জেল আপিল ১২টি। অন্যদিকে বিস্ফোরক মামলায় ১১ ভলিউমে মোট ৪৯৫টি পেপারবুক এসেছে, যা ১০ হাজার পৃষ্ঠার। এ মামলায় আপিল ১৭টি ও জেল আপিল ১২টি। এখন এসব পেপারবুক যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। আর এসব মামলায় পলাতক আসামি থাকলে তাদের জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী) নিয়োগ করা হবে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে প্রধান বিচারপতি বরাবরে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান উচ্চ আদালতের এই কর্মকর্তা। আইনজীবীরা জানান, ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালত যখন আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেন তখন ওই দণ্ড কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক মামলার সব নথি হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন। যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। ওই নথি আসার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে। পেপারবুক প্রস্তুত হলে মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত হয়েছে বলে ধরে নেয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ জন :
বিচারিক আদালতের রায়ে ১৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়। তারা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম (সম্প্রতি মারা গেছেন), হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দিন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ও মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ১৯ জন :
বিচারিক আদালতের রায়ে ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়। তারা হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ ও আরিফুল ইসলাম আরিফ, জঙ্গিনেতা মুফতি আবদুর রউফ, হাফেজ ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবদুল হান্নান ওরফে সাব্বির, মুরসালিন, মুত্তাকিন, জাহাঙ্গীর বদর, আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, আবু বকর সিদ্দিক ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মো. ইকবাল, রাতুল আহমেদ, মাওলানা লিটন, মো. খলিল ও শাহাদত উল্লাহ ওরফে জুয়েল।
বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত দণ্ডিত ১১ জন হলেন- মেজর জেনারেল (অব.) এ টি এম আমীন, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার, লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ওরফে ডিউক, সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, সাবেক আইজিপি শহুদুল হক, সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান, ডিএমপির সাবেক ডিসি (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, সাবেক আইজিপি খোদা বক্স চৌধুরী, জোট সরকার আমলের তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, সাবেক এএসপি মুন্সী আতিকুর রহমান ও সাবেক পুলিশ সুপার রুহুল আমীন।
বিচারিক আদালতে এই মামলার রাষ্ট্র পক্ষের প্রধান কৌঁসুলি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ধারাবাহিকতায় এই হামলা চালানো হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী গণতন্ত্রের মানসকন্যা মাদার অব হিউম্যানিটি সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশুন্য ও দেশকে অকার্যকর করাই ছিল ওই হামলার উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, ওই হামলায় সমরাস্ত্র আর্জেস গ্রেব্যবহার করা হয়। জঙ্গিরা তৎকালীন ক্ষমতাসীন মহলের মদদ ও সহায়তায় বর্বরোচিত এ মামলা চালায় শান্তিপ্রিয় আওয়ামী লীগ ও সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ সমাবেশের ওপর। তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন ওই ঘটনায় নিহত হন। মারাত্মক আহত হন কয়েকশো নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেকে ওই ঘটনার শিকার হয়ে দেহে এর ক্ষত বহন করছেন। সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আর্জেস গ্রেনেডের স্প্রিন্টার দেহে বহন করে অসুস্থ হয়ে পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেন ঢাকার সাবেক মেয়র ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ। এখন হাইকোর্টে দ্রুত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার শুনানি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ।