Home কৃষি সাড়ে ৪ কোটি টাকার প্রকল্প: কাজে আসছে না

সাড়ে ৪ কোটি টাকার প্রকল্প: কাজে আসছে না

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি

ফেনী: পরশুরাম পৌর এলাকায় শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদের পানি ধরে রাখার জন্য কহুয়া নদীতে বসানো হয়েছিল রাবার ড্যাম। সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৬ সালে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। কিন্তু দুই বছর পরই তা অকেজো হয়ে যায়। এখন দীর্ঘদিন ধরে ড্যামের অফিসঘর, মোটর ও বিশালাকৃতির টিউব পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

বেড়াবাড়িয়া এলাকায় কয়েক কোটি টাকার প্রকল্পটি বর্তমানে কৃষকদের কোনো কাজে আসছে না। তাঁদের সেচপাম্প বসিয়ে নদী থেকে পানি তুলে চাষাবাদ করতে হচ্ছে। এতে খরচ বেড়ে যাওয়ায় ফসলি জমির বড় এক অংশ অনাবাদি থেকে যাচ্ছে।

স্থানীয় কৃষকেরা জানান, ভৌগোলিকভাবে ফুলগাজী উপজেলার তুলনায় পরশুরাম উঁচু। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই ড্যামটি স্থাপন করেছে। এখন বোরো মৌসুমে পরশুরামে ড্যামটি ফোলানো হলে ফুলগাজীর কহুয়া নদীতে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এ বিষয়টির স্থায়ী সমাধান চান কৃষকেরা।

কৃষক নাসির উদ্দিন জানান, ড্যামের মাধ্যমে আটকানো পানি পেয়ে পৌর এলাকার বেড়াবাড়িয়া, সাতকুচিয়া, সলিয়া, উত্তর গুথুমা, কোলাপাড়া ও বাসপদুয়া গ্রামের কৃষকেরা চাষাবাদে অধিক মনোযোগী হয়েছিলেন। কিন্তু দুই বছর পরই ড্যামটি অকেজো হয়ে যায়।

সাবলু নামের আরেক কৃষক বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ড্যামটি ফোলানো হয় না। তাই কহুয়া নদীতে পানি আটকানো যায় না। এ অবস্থায় আশপাশের কৃষক বেকায়দায় পড়ে ইঞ্জিনচালিত সেচপাম্প স্থাপন করে স্বল্প পরিসরে চাষাবাদ করে আসছেন।

উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবাঞ্জন বনিক জানান, ড্যামটি নির্মাণের পর শুষ্ক মৌসুমে অন্তত ৪ হাজার হেক্টর জমি আবাদের আওতায় আসে। কিন্তু দুই বছর পর এটি অকেজো হয়ে যায়। এর পর থেকে কৃষক সেচযন্ত্র বসিয়ে পানি তুলে চাষাবাদ করছেন। তবে ড্যামের স্থানীয় তত্ত্বাবধায়ক ছাবু মিয়া জানান, রাবার ড্যাম সচল আছে। ওপরে কাভার ফেটে গেলেও ভেতরে টায়ার ঠিক রয়েছে। এ এলাকায় ভারতের উজানের পানি দুই নদীতে আসে। কহুয়ায় ড্যাম ফোলালে পানি মুহুরী নদীর দিকে চলে যায়। মুহুরীর কাছে আরেকটি ড্যাম হলে পরশুরামে পানি স্থির থাকবে।

ড্যামটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ দিতে সম্প্রতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন বিষয়টি জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় উত্থাপন করেন। তিনি এ ক্ষেত্রে পাউবো ও জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কৃষি কর্মকর্তা আমজাদ বলেন, কহুয়া নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল ১ হাজার ১০০ কৃষক। বোরো মৌসুমে ড্যামটি ফোলানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি ফুলিয়ে পানি আটকানো গেলে পরশুরাম এলাকায় শুষ্ক মৌসুমে আবাদ বাড়বে।

এ বিষয়ে পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান ভূঞা জানান, পরশুরামে স্থাপিত রাবার ড্যামটি সচল আছে। তবে এটি ফুলিয়ে পানি আটকালে পরশুরামের কৃষক উপকৃত হলেও ফুলগাজী অংশের কৃষকেরা পানি না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন; যার কারণে এটি ফোলানো হয় না। কৃষি বিভাগ এটি ফোলানোর জন্য বললে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।