আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ব্লকবাস্টার সিনেমা থেকে বাস্তব জীবনে, যৌন রোবট এখন আর কল্পবিজ্ঞান নয়—এরা ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে মানুষের দৈনন্দিন সম্পর্কের এক সম্ভাব্য অংশ। এমনকি অনেক বিশ্লেষক ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে মানব-মানব যৌনের চেয়ে মানব-রোবট যৌন সম্পর্ক বেশি প্রচলিত হবে।
সম্প্রতি চীনের ডংগুয়ান শহরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রিডমি একটি নতুন ধরনের সেক্স রোবট বাজারে এনেছে, যা প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে যেমন অদ্ভুত, তেমনি উদ্বেগজনকও।
এই রোবটকে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যা ব্যবহারকারীর হাতে তুলে দেয় শারীরিক অঙ্গভঙ্গি থেকে শুরু করে শব্দ উৎপাদনের পূর্ণ ক্ষমতা। রোবটটি ব্লুটুথের মাধ্যমে একটি অ্যাপের সঙ্গে সংযুক্ত হয়, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী পছন্দ অনুযায়ী ‘থ্রাস্টিং’, ‘স্কুইজিং’ এমনকি ‘মোনিং’ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
রোবটটি পরিচালনার জন্য ‘Mutuafun’ নামে একটি অ্যাপ ব্যবহার করতে হয়, যা গুগল প্লে স্টোর ও অ্যাপ স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে। এই অ্যাপে ব্যবহারকারী একটি ‘রুম’ তৈরি করতে পারেন, যেখানে একসঙ্গে ১০ জন পর্যন্ত সদস্য যোগ দিয়ে রোবটটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। প্রতিটি রোবটের দাম ১,৮৯৯ ডলার বা প্রায় ১,৪০০ পাউন্ড।
রিডমির দাবি অনুযায়ী, এই রোবটে রয়েছে ১০টি ভাইব্রেশন মোড, ১০টি সাকিং মোড এবং ছয় ধরনের শব্দ মোড। এমনকি রয়েছে এলফ রূপেও একটি সংস্করণ। ব্যবহারকারীরা ত্বকের রঙ, চুলের ধরন, চোখের রঙ অনুযায়ী পছন্দমতো রোবট নির্বাচন করতে পারেন।
এই প্রযুক্তিকে “শারীরিক ঘনিষ্ঠতা ও ডিজিটাল যোগাযোগের মধ্যে এক সেতুবন্ধ” বলে দাবি করছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তবে, বিশেষজ্ঞরা এর নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ইসেট এর বৈশ্বিক উপদেষ্টা জেক মুর মেইল অনলাইনকে বলেন, “যেকোনো ইন্টারনেট-সংযুক্ত ডিভাইসই যদি দুর্বল নিরাপত্তা নিয়ে তৈরি হয়, তবে তা দুষ্কৃতকারীদের জন্য বড় সুযোগ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই ধরনের রোবট ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহে সক্ষম, যা ভবিষ্যতে ব্ল্যাকমেইল বা নজরদারির কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।”
তিনি আরও সতর্ক করেন, এসব ডিভাইস তৃতীয় পক্ষ দ্বারা হ্যাকড হয়ে রিমোটলি নিয়ন্ত্রিত হতে পারে এবং বাড়ির ভেতর নজরদারির একটি যন্ত্র হিসেবেও ব্যবহার হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের এই উদ্বেগের মাঝেও রিডমি আশা করছে, তাদের উদ্ভাবন দম্পতিদের জন্য একটি আনন্দদায়ক প্রযুক্তি হিসেবে জায়গা করে নেবে।