Home First Lead মধ্যপ্রাচ্যে উত্তপ্ত আগুনে নতুন ঘি: হুথিদের হুঁশিয়ারি

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তপ্ত আগুনে নতুন ঘি: হুথিদের হুঁশিয়ারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলার পরপরই মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার গ্রাফ যেন আগুন ছুঁয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র যখন ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক কেন্দ্র ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিলেন, তখন ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী হুমকি দিল রেড সাগরে মার্কিন জাহাজ ও যুদ্ধজাহাজের ওপর হামলার।

 এক বিবৃতিতে হুথি বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারে জানিয়েছেন, “ইসরায়েলি আগ্রাসনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ আমাদের জন্য যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। রেড সাগরে থাকা তাদের সকল জাহাজই আমাদের বৈধ লক্ষ্য হবে।”

এর আগে হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণে ট্রাম্প বলেন, “ইরানের পারমাণবিক স্বপ্ন আজ ধ্বংস হয়েছে। আমাদের সাহসী যোদ্ধারা সফলতার সঙ্গে অভিযান সম্পন্ন করেছে। এখন শান্তির সময়।”

ট্রাম্প আরও জানান, সব বিমান নিরাপদে ইরান সীমান্ত ছেড়ে চলে গেছে এবং প্রাথমিক লক্ষ্য ফোরদো কেন্দ্রে সম্পূর্ণ বিস্ফোরক বর্ষণ করা হয়েছে।

এরইমধ্যে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এক বিবৃতিতে বলেন, “এই হামলা আইনবহির্ভূত ও নিন্দনীয়। আমাদের ভূখণ্ডে হামলার প্রতিউত্তর দেয়া হবে সর্বোচ্চ মাত্রায়।”

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এ ঘটনাকে “বিপজ্জনক একটি মোড়” হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “বিশ্ব এখন এমন এক সীমানায় এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে সামান্য উসকানিও বড় ধরনের যুদ্ধের রূপ নিতে পারে।”

অপরদিকে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি জানিয়েছেন, ইরানে হামলার পর তাদের নজরদারিতে কোনো অতিরিক্ত বিকিরণ ছড়ানোর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ইউকে প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ইরানকে ফের আলোচনার টেবিলে ফিরতে হবে। পরমাণু অস্ত্রের সম্ভাবনা ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ অনিবার্য ছিল।”

এদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “এই সিদ্ধান্ত ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

মধ্যপ্রাচ্যের এই বহুমুখী সংঘাত এখন শুধুই ইসরায়েল-ইরান কিংবা যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ইয়েমেনের হুথিদের হুমকি এই যুদ্ধকে সমুদ্রপথে টেনে নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে বাণিজ্যপথ, জ্বালানি পরিবহন ও ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য আরও বিপন্ন হয়ে উঠতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন দরকার নতুন কূটনৈতিক কল্পনাশক্তি—যেখানে যুদ্ধ বন্ধ হবে, আর শান্তির পথে হাঁটবে বিশ্ব।