Home খেলাধুলা ভারতে ডিজিটাল নিষেধাজ্ঞা: অলিম্পিকজয়ী নাদিমের একাউন্ট ব্লক

ভারতে ডিজিটাল নিষেধাজ্ঞা: অলিম্পিকজয়ী নাদিমের একাউন্ট ব্লক

আরশাদ নাদিম। ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও একবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এবার সেই উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে ডিজিটাল জগতে। ভারত সরকার সম্প্রতি পাকিস্তানের ১৬টি ইউটিউব চ্যানেল ব্লক করেছে, যার মধ্যে রয়েছেন তিন প্রাক্তন ক্রিকেটার রশিদ লতিফ, শোয়েব আখতার ও বাসিত আলির চ্যানেলও। সেইসঙ্গে এবার ভারতে ব্লক করা হয়েছে অলিম্পিক সোনাজয়ী জ্যাভেলিন থ্রোয়ার আরশাদ নাদিমের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট।

ভারতীয় ব্যবহারকারীরা এখন আরশাদ নাদিমের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে প্রবেশ করতে পারছেন না। স্ক্রিনে ভেসে আসছে বার্তা: “Account not available in India. This is because we complied with a legal request to restrict this content.” অর্থাৎ, একটি আইনি অনুরোধের ভিত্তিতেই এই অ্যাকাউন্ট ভারতে ব্লক করা হয়েছে।

নাদিম সম্প্রতি ভারতের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন নীরজ চোপড়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন ‘এনসি ক্লাসিক’ নামক একটি জ্যাভেলিন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য। যদিও পরে তিনি সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেননি। এই আমন্ত্রণটি এসেছিল ঠিক পহেলগাঁও হামলার আগের দিন। এরপরই সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় তীব্র বিতর্ক, যেখানে কটাক্ষের মুখে পড়েন নীরজ নিজেও। ডানপন্থী রাজনৈতিক গোষ্ঠী থেকে শুরু করে কিছু সাধারণ ব্যবহারকারী পর্যন্ত তাঁর ‘দেশপ্রেম’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পরিস্থিতির জেরে নীরজকে সামাজিক মাধ্যমে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে হয়, যেখানে তিনি জানান, এটি কেবল একটি ক্রীড়াঙ্গনের আমন্ত্রণ ছিল, কোনও রাজনৈতিক বার্তা নয়।

এদিকে, আরশাদ নাদিমের অ্যাকাউন্ট ছাড়াও ইনস্টাগ্রাম ভারতে আরও একাধিক নামী পাকিস্তানি সেলিব্রিটি ও ইনফ্লুয়েন্সারের অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস সীমিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছেন অভিনেত্রী মাহিরা খান, হানিয়া আমির এবং গায়ক-অভিনেতা আলি জাফর। এইসব প্রোফাইলে প্রবেশের সময়ও একই ধরনের ‘আইনি অনুরোধ’-এর বার্তা দেখা যাচ্ছে।

তথ্যনির্ভর নজরদারি না রাজনৈতিক বার্তা?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কেবল কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ নয়, বরং একধরনের কৌশলগত ‘ডিজিটাল স্টেটক্রাফ্ট’ বা সফট পাওয়ার প্রয়োগ। সরকার চাইছে অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও ‘জাতীয় স্বার্থে’ একতরফা বিবরণ প্রচার নিশ্চিত করতে। পহেলগাঁও হামলার পরের ৪৮ ঘণ্টায় যেভাবে বিভিন্ন পাকিস্তানি অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ বা সীমিত করা হচ্ছে, তাতে এটা স্পষ্ট যে ভারত সরকার সোশ্যাল মিডিয়াতেও ‘বর্ণনা যুদ্ধ’  লড়তে প্রস্তুত।

ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও বিনোদন দীর্ঘদিন ধরেই দুই দেশের মধ্যে বিরল সম্পর্কের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে, এবার সেই সেতুগুলিও ক্রমশ ভেঙে পড়ছে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক আবেগের ভারে। সামাজিক মাধ্যমে যে অনুপস্থিতি তৈরি হচ্ছে, তা হয়তো ভবিষ্যতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কেও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে।