Home আন্তর্জাতিক স্বর্ণের বাজারে ‘সুবর্ণ সুযোগ’ না ‘ঝুঁকি’? বিশ্লেষকরা দ্বিধান্বিত

স্বর্ণের বাজারে ‘সুবর্ণ সুযোগ’ না ‘ঝুঁকি’? বিশ্লেষকরা দ্বিধান্বিত

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক:

বাণিজ্যিক উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার ইঙ্গিতে বিশ্ব স্বর্ণবাজারে সোমবার ব্যাপক দরপতন হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্য আলোচনা ইতিবাচক পরিণতির দিকে এগোচ্ছে এই আশাবাদের মধ্য দিয়ে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের দিকে ঝুঁকে পড়েছেন।  ফলে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বিবেচিত স্বর্ণের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে স্পট গোল্ডের দাম সোমবার ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমে দাঁড়ায় প্রতি আউন্স ৩,২৭৭.৬৮ ডলারে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের গোল্ড ফিউচারস ১ দশমিক ৯ শতাংশ হ্রাস পেয়ে নেমে আসে ৩,২৮১.৪০ ডলারে।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিনিধিরা রবিবার বৈঠক শেষে ‘গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা’ ও ‘চুক্তির কাছাকাছি’ পৌঁছানোর দাবি করে। এর ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা অনেকটা কমে যায়। এই চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা চলছে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানান।

ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাণিজ্য আলোচনা নিয়ে অগ্রগতির দাবি এবং সুইজারল্যান্ডে চীনের সঙ্গে চলমান আলোচনা ডলার সূচককে শক্তিশালী করেছে। এরপ্রভাব পড়েছে স্বর্ণের দামে। নিকট ভবিষ্যতে ডলারের আরও মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কমে আসায় স্বর্ণের নিরাপদ সম্পদ হিসেবে চাহিদা হ্রাস পেতে পারে। তাতে স্বর্ণের দাম কমে ৩,২০০ ডলার পর্যন্ত নামার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশ্ব বাজারে স্বর্ণের দরপতনের প্রভাব পড়েছে ভিয়েতনামেও। সাইগন জুয়েলারি কোম্পানি তাদের স্বর্ণবারের দাম ০.৮২ শতাংশ কমিয়ে প্রতিটা টেল ১২১ মিলিয়ন ভিয়েতনাম ডঙ নির্ধারণ করেছে, যা প্রায় ৪,৬৫৮.৬ মার্কিন ডলার। স্বর্ণ আংটির দামও ০.৮৫ শতাংশ কমে হয়েছে ১১৬ মিলিয়ন ভিয়েতনাম ডঙ।

বর্তমানে ভিয়েতনামে স্বর্ণের দাম আন্তর্জাতিক দামের তুলনায় প্রতি টেলে ১৮ মিলিয়ন ডঙ বেশি। একটি টেল সমান ৩৭.৫ গ্রাম বা প্রায় ১.২ আউন্স।

এদিকে ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আরও একটি বড় ভূমিকা রাখছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি রোববার রাত পর্যন্ত অটুট ছিল, যদিও দুই পক্ষই চুক্তি ভাঙার অভিযোগ তুলেছে।

এছাড়া, গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল আগাম সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন, যা স্বর্ণের উপর আরও চাপ তৈরি করেছে। তিনি জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি এবং শ্রমবাজারের ঝুঁকি এখন বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে।

 কিছু বিশ্লেষক বলছেন, স্বল্পমেয়াদে স্বর্ণের দর কমলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারে, যদি বাণিজ্য আলোচনায় নতুন জটিলতা দেখা দেয় কিংবা মূল্যস্ফীতির হার আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছে যায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে এই মুহূর্তে বিনিয়োগকারীদের নজর দুটি বিষয়ের ওপর—ডলারের দিকনির্দেশনা এবং যুক্তরাষ্ট্র-চীন আলোচনার বাস্তব অগ্রগতি। উভয়ের দিকেই স্থায়ী আস্থা গড়ে না উঠা পর্যন্ত স্বর্ণবাজারে চূড়ান্ত পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ।