বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ফেনী: ফেনীতে চিকিৎসা অবহেলার এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। সিজারিয়ান অপারেশনের ছয় মাস পর ফরিদা ইয়াসমিন (৪০) নামে এক নারীর পেট থেকে গজ কাপড় বের করা হয়েছে। বুধবার (২৭ আগস্ট) রাতে ফেনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গজটি অপসারণ করা হয়। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ফরিদা ইয়াসমিন ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার জয়চাঁদপুর গ্রামের প্রবাসী মহি উদ্দিনের স্ত্রী। পরিবারের অভিযোগ, গত ৩ ফেব্রুয়ারি ফেনীর আল-কেমী হাসপাতালে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. তাসলিমা আক্তারের তত্ত্বাবধানে তার সিজার হয়। এরপর থেকেই তিনি অস্বাভাবিক পেটব্যথায় ভুগছিলেন। চিকিৎসককে জানালেও সেটিকে স্বাভাবিক ব্যথা বলে আশ্বস্ত করা হয়। পরে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বেরিয়ে আসে পেটের ভেতর রয়ে যাওয়া গজ কাপড়ের সত্য।
বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যরা ফের অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন। ফরিদার ভাই মো. শাহ ফয়সালের দাবি, দ্বিতীয় দফার অস্ত্রোপচারে পাঁচ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। তার ভাষায়, “আমার বোন মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে। এ দায়ভার চিকিৎসক তাসলিমারই নিতে হবে।” এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেনী সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে এবং আইনি পদক্ষেপের প্রস্তুতি চলছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে চিকিৎসক তাসলিমা আক্তার জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন, তবে এ নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে চাননি। আল-কেমী হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মান্নান ঘটনাটিকে ‘দুর্ঘটনা’ আখ্যা দিয়ে জানান, ছয় মাস আগের এ তথ্য সম্প্রতি তাদের জানা গেছে। বিষয়টি তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে।
ফেনী সিভিল সার্জন মোহাম্মদ রুবাইয়াত বিন করিম জানান, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে আসলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।