Home বিনোদন ঘরের ভেতর জলজ পৃথিবী কেন তরুণদের নতুন সখ

ঘরের ভেতর জলজ পৃথিবী কেন তরুণদের নতুন সখ

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: বাংলাদেশে শহর ও গ্রাম দুই পরিবেশেই অ্যাকুয়ারিয়াম রাখা এখন এক ধরনের নীরব ট্রেন্ড। ছোট ফ্ল্যাটের ড্রয়িংরুম হোক বা গৃহস্থের বড় বসার ঘর, অনেকেই এখন একটি স্বচ্ছ কাচের ট্যাংকের মধ্যে তৈরি করছেন নিজেদের ক্ষুদ্র জলজ পরিবেশ। কেউ শখ থেকে, কেউ মানসিক প্রশান্তির তাগিদে, আবার কেউ নিজের ঘরকে নান্দনিকভাবে সাজানোর অংশ হিসেবেই এই সখে ঝুঁকছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অ্যাকুয়ারিয়াম মানুষের মনোযোগ ধরে রাখে এবং বাড়ির পরিবেশে শান্ত সুর তৈরি করে। ট্যাংকের ভেতর মাছের ধীর গতিতে সাঁতার, পানির হালকা গতি এবং আলো–ছায়ার নান্দনিকতা অনেকের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।

শহরের বাজারে এখন অ্যাকুয়ারিয়াম শিল্পটি বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। সাধারণ গোল্ডফিশ থেকে শুরু করে গাপি, এঞ্জেলফিশ, প্লাটি, টেট্রা কিংবা রঙিন কই, বেছে নেওয়ার সুযোগ অনেক। শুধু মাছ নয়, ট্যাংকের ভেতর পাথর, নকশা করা কাঠ, কৃত্রিম ঘাস, জীবন্ত জলজ গাছ কিংবা আধুনিক ফিল্টার ব্যবস্থাও সখের জগৎকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তরুণরা অনেকেই ইউটিউব বা সোশ্যাল মিডিয়া দেখে নিজেরাই ট্যাংক সেটআপ করতে শিখছেন।

তবে এই সখের চ্যালেঞ্জও আছে। নিয়মিত পানি পরিবর্তন, পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ, ফিল্টার পরিষ্কার রাখা এবং আলো–ছায়ার নিয়ন্ত্রণ—সব মিলিয়ে অ্যাকুয়ারিয়াম রক্ষণাবেক্ষণ সময়সাপেক্ষ। অনেক নবীন শখের মানুষ প্রয়োজনীয় যত্ন না জানার ফলে প্রথম দিকে সমস্যায় পড়েন। তাই মাছ কেনার আগে প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করাকে বিশেষজ্ঞরা প্রয়োজনীয় মনে করেন।

অ্যাকুয়ারিয়ামের ব্যবসায়ীরাও বলছেন, শখ হিসেবে এর জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে শীত ও উৎসবমুখর সময়ে বিক্রি বাড়ে দ্বিগুণ। কর্মব্যস্ত জীবনে বাড়িতে ফিরে একটি সাজানো ট্যাংকের সামনে কয়েক মিনিট বসে থাকা অনেকের কাছে এক ধরনের মানসিক থেরাপি।

সব মিলিয়ে বলা যায়, অ্যাকুয়ারিয়াম শুধু একটি শখ নয়, বরং এটি ঘরের ভেতর একটি শান্ত, জীবন্ত পৃথিবী তৈরি করার শিল্প। সঠিক যত্নে এই সখ ঘরকে শুধু সুন্দরই করে না, বরং মানুষের মনেও এনে দেয় প্রশান্তির ছাপ।