সিলেটের আঞ্চলিক গানের জয়জয়কার
বিনোদন ডেস্ক: সিলেট মাটি ও মানুষের ঘ্রাণ মাখা সিলেটের আঞ্চলিক গান এখন আর শুধু হাওর-বাঁওড় কিংবা গ্রামের মেঠো পথে সীমাবদ্ধ নেই। রাধারমণ দত্ত, হাসন রাজা আর শাহ আবদুল করিমের উত্তরসূরিরা সেই সুরের জাদু ছড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্বের আনাচে-কানাচে। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে সিলেটের লোকজ ধারা এক নতুন ‘গ্লোবাল আইডেন্টিটি’ লাভ করেছে।
সম্প্রতি “আইলারে নয়া দামান” গানটির আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা প্রমাণ করেছে যে, খাঁটি আঞ্চলিক সুরের আবেদন কখনো ফুরায় না। ইউটিউব থেকে শুরু করে টিকটক কিংবা ইনস্টাগ্রাম রিলস—সবখানেই এখন সিলেটের ধামাইল তালের রাজত্ব। শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এমনকি প্রবাসী বাঙালিদের মাধ্যমে ইউরোপ-আমেরিকার ক্লাবগুলোতেও বাজছে সিলেটি গান।
বর্তমান সময়ের সংগীতশিল্পীরা পুরনো কালজয়ী গানগুলোকে নতুন আঙ্গিকে (Remake) উপস্থাপন করছেন। তরুণ প্রজন্মের সম্পৃক্ততা: আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহারে নতুন প্রজন্মের কাছে গানগুলো আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।
সাংস্কৃতিক বিনিময়: ভিনভাষী মানুষও সিলেটি শব্দের মিষ্টতায় মুগ্ধ হয়ে এই গানগুলো নিয়ে ভিডিও তৈরি করছেন।
সিলেটের গানের এই জনপ্রিয়তার মূলে রয়েছে মরমি কবিদের শক্তিশালী ভিত।
ধামাইল গান: রাধারমণ দত্তের সৃষ্ট ধামাইল গান এখন বিশ্বজুড়ে বিয়ের অনুষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বিচ্ছেদ ও আধ্যাত্মিকতা: শাহ আবদুল করিমের গানগুলো মানুষের জীবনের দর্শন ও বিরহকে যেভাবে ফুটিয়ে তোলে, তা বিশ্বসংগীতে বিরল।
সিলেটের আঞ্চলিক গান এখন কেবল বিনোদনের খোরাক নয়, বরং এটি একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ব্র্যান্ড। কোক স্টুডিও বাংলা থেকে শুরু করে বড় বড় রিয়েলিটি শো-তে সিলেটের আঞ্চলিক গানকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সংগীত সমালোচকদের মতে, সিলেটের গানের এই ‘ভাইরাল’ প্রবণতা বাংলা লোকসংগীতকে আন্তর্জাতিক বাজারে নতুন করে পরিচিত করছে।
“সিলেটের গান মানেই প্রাণের টান। এই সুর যত আধুনিক হচ্ছে, ততই এটি মানুষের হৃদয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে। শেকড়ের এই সুরই হোক আমাদের আগামীর প্রেরণা।”










