বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছাড়া নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা-কর্মীরা প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে তারা দলীয় রাজনৈতিক কার্যালয় স্থাপন করে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত করে আসছে যা অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে।
নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয় ও কার্যক্রম ভারতে বন্ধের জন্য বাংলাদেশ সরকার অনুরোধ জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার এক বিবৃতিতে এ অনুরোধ জানায়।
এতে বলা হয়, ‘নিষিদ্ধ’ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের অফিস ভারতের রাজধানী দিল্লি এবং কলকাতায় স্থাপনের খবরে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। ভারতের মাটিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপের পটভূমিতে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের রাজধানী দিল্লি ও কলকাতায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় স্থাপনের প্রতিবেদনগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের নজরে এসেছে। ভারতের মাটিতে অবস্থান করে আওয়ামী লীগের নেতাদের পরিচালিত ক্রমবর্ধমান বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে এ ঘটনাটি ঘটছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী গুরুতর অপরাধের কারণে একাধিক ফৌজদারি মামলায় পলাতক থাকা এ দলের বহু জ্যেষ্ঠ নেতা ভারতের ভূখণ্ডে অবস্থান করছে। এর আগে, ২১ জুলাই এক অজ্ঞাত এনজিওর আড়ালে এ নিষিদ্ধ দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা দিল্লি প্রেস ক্লাবে এক জনসংযোগ কর্মসূচি আয়োজনের পরিকল্পনা করে এবং পরবর্তীতে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের মাঝে প্রচারপত্র বিতরণ করে। এ পর্যন্ত ভারতের গণমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনে এ দলের কর্মকাণ্ডের ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে, যা ভারতের মাটিতে পরিচালিত হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড—বিশেষত নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের পলাতক নেতা বা কর্মীরা ভারতের মাটিতে বৈধ বা অবৈধভাবে অবস্থান করে পরিচালিত কার্যকলাপ, যার মধ্যে অফিস স্থাপনও অন্তর্ভুক্ত—বাংলাদেশের জনগণ ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট চ্যালেঞ্জ।
এ ধরনের ঘটনা পারস্পরিক বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ভারত-বাংলাদেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে ঝুঁকির মুখে ফেলে এবং বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক রূপান্তরের জন্যও গুরুতর প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি এটি বাংলাদেশের জনমনে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে, যা দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করার চলমান প্রচেষ্টাকে প্রভাবিত করতে পারে।
তাই বাংলাদেশ সরকার ভারতের সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে ভারতের মাটিতে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের মাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ড যেন পরিচালিত না হয় এবং এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ডকে কোনোভাবেই অনুমোদন বা সমর্থন না দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে ভারতের মাটিতে নিষিদ্ধ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়(গুলো) অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।