বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ’ (আপ বাংলাদেশ) আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করছে । আগামী ৯ মে, শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু হবে।
এ বিষয়ে আপ বাংলাদেশের প্রধান উদ্যোক্তা আলী আহসান জুনায়েদ গণমাধ্যমকে জানান, “৯ মে শহীদ মিনারে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে আমাদের প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। এই অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের উপস্থিতি থাকবে। তাদের উপস্থিতিতে আমরা আমাদের কমিটি ঘোষণা করব। এছাড়া জুলাই আন্দোলনের অংশীদারদের পাশাপাশি ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন সংগঠকরাও উপস্থিত থাকবেন।”
আলী আহসান জুনায়েদ আরও বলেন, “আমাদের প্রথম লক্ষ্য হলো জুলাই আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষাগুলির বাস্তবায়ন। তবে দীর্ঘমেয়াদে, আমরা বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন চাচ্ছি। আমরা চাই একটি যোগ্য, নৈতিক ও সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ নেতৃত্ব গড়ে উঠুক। আমাদের উদ্দেশ্য হলো সামাজিক সুবিচার, ধর্মীয় মূল্যবোধে শ্রদ্ধাশীল সমাজ এবং সামাজিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা।”

জুনায়েদ বলেন, “আমরা বাংলাদেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই এবং ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মবিদ্বেষ ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”
এই রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা প্রথমবারের মতো গত মার্চে ফেসবুক পোস্টে করেন আলী আহসান জুনায়েদ। সেখানে তিনি জানান, নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মটির নাম ‘ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)’ এবং তিনি এর প্রধান উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, “জুলাই আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করার জন্য আমরা এই প্ল্যাটফর্মটি গঠন করছি, যেখানে দেশের ছাত্র-জনতা একত্রিত হবে।”
এছাড়া, ফেসবুক পোস্টে জুনায়েদ আরও জানান, পিলখানা, শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যা সহ নানা ভয়াবহ ঘটনার বিচার, আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ এবং জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবারের অর্থনৈতিক সুরক্ষা প্রদান—এই বিষয়গুলো ‘আপ বাংলাদেশ’ এর প্রাথমিক লক্ষ্য হবে।
তিনি বলেন, “আমরা চাই একটি গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি লাভ করা বাংলাদেশ, যেখানে সকলের সমান অধিকার থাকবে। আমাদের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য হলো, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যাপক পরিবর্তন ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা।”
সংক্ষেপে লক্ষ্যসমূহ:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্বীকৃতি ও বিচার, ফ্যাসিবাদ, আধিপত্যবাদ, ধর্মবিদ্বেষ ও দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গঠন,সামাজিক সুবিচার, যোগ্য নেতৃত্ব ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্পর্কের পুনঃপ্রতিষ্ঠা,বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ সমাজ গঠন
আপ বাংলাদেশের আয়োজনে সারা দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলন ও সচেতনতা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান শক্তির সঙ্গী হয়ে তারা রাজনৈতিক সমতা, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
এদিকে, আপ বাংলাদেশ ঘোষিত প্ল্যাটফর্মটি নতুন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও ছাত্রদের প্রভাবশালী আন্দোলনের একটি শক্তিশালী সূচনা হতে পারে। রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন কিছু প্রবর্তনের আশা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ‘আপ বাংলাদেশ’।