Home অন্যান্য “আমার চাকরি কি কাড়বে এআই?”: বিশ্বজুড়ে প্রশ্ন ও উৎকণ্ঠা

“আমার চাকরি কি কাড়বে এআই?”: বিশ্বজুড়ে প্রশ্ন ও উৎকণ্ঠা

আইটি ডেস্ক:

বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোচিত প্রশ্ন হয়ে উঠেছে: “Will AI replace me?” অর্থাৎ, “আমার চাকরি কি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দখল করে নেবে?” গুগল ট্রেন্ডস অনুসারে, ফিলিপাইন, ভারত, সিঙ্গাপুর, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রশ্নের অনুসন্ধান উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। শুধু পেশাগত উৎকণ্ঠা নয়, এটি হয়ে উঠেছে এক বৈশ্বিক মানসিক চাপের প্রতিফলন।

বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অগ্রগতি দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। চ্যাটবট, কনটেন্ট জেনারেটর, কোডিং এআই, ভয়েস-সিন্থেসাইজার থেকে শুরু করে স্বয়ংক্রিয় রিপোর্টিং সিস্টেম—বিভিন্ন খাতে মানুষের শ্রমের বিকল্প হয়ে উঠছে সফটওয়্যার ও মেশিন। এই বাস্তবতায় বহু মানুষ নিজের পেশাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত।

কোন দেশে সবচেয়ে বেশি ভয়?

বিশ্বব্যাপী ট্রেন্ড বিশ্লেষণ বলছে, সবচেয়ে বেশি এই প্রশ্নের অনুসন্ধান হয়েছে ফিলিপাইনে। এরপর রয়েছে ভারত, সিঙ্গাপুর, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র। এ তালিকা বলছে, অর্থনীতির ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এআই নিয়ে সংশয় যেমন প্রযুক্তিনির্ভর সমাজে তীব্র, তেমনি বিকাশমান অর্থনীতিতেও ব্যাপক আতঙ্ক তৈরি করেছে।

ভারতের বেঙ্গালুরুতে সফটওয়্যার প্রকৌশলী অরুণ মেহতা বলেন, “আগে ভাবতাম এআই শুধু গ্রাফিক ডিজাইন বা লেখালিখির কাজে লাগবে। এখন দেখি প্রোগ্রামিং কাজেও চ্যাটজিপিটি বা কোডিং এআই ব্যবহার হচ্ছে। এতে আমি উদ্বিগ্ন।”

কোন পেশাগুলো ঝুঁকিতে?

বিশ্লেষকরা বলছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে প্রথমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিম্ন ও মাঝারি স্তরের তথ্যভিত্তিক পেশাগুলি। যেমন:

  • কাস্টমার সার্ভিস
  • কনটেন্ট রাইটিং
  • অ্যাকাউন্টিং ও হিসাব রক্ষণ
  • টেলিসেলস
  • গ্রাফিক ডিজাইন
  • সফটওয়্যার টেস্টিং

তবে শুধু ঝুঁকি নয়, সম্ভাবনাও রয়েছে। একাধিক গবেষণা বলছে, এআই সঠিকভাবে ব্যবহার করলে কাজের গতি বাড়বে, খরচ কমবে এবং নতুন ধরনের পেশার উদ্ভব ঘটবে।

এআই নেবে কাজ, না বদলাবে কাজের ধরন?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “AI will not replace you, but a person using AI might.” অর্থাৎ, যিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগাতে জানেন, তিনিই ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে থাকবেন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কার্ল ফ্রে বলেন, “এআই একদিকে কাজ নেবে, আবার অন্যদিকে মানুষের জন্য নতুন কাজ তৈরি করবে। তবে পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত না থাকলে চাকরি হারানোর আশঙ্কা সত্যিই বাড়বে।”

সরকার ও সমাজ কী করছে?

বিশ্বের অনেক দেশই এখন AI দক্ষতা বৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, সিঙ্গাপুরে সরকার ‘AI Readiness Program’ চালু করেছে, যাতে কর্মীদের রি-স্কিল ও আপস্কিল করানো হয়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশেও জাতীয় পর্যায়ে এআই শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করার চিন্তা চলছে।

সারসংক্ষেপে:

  • “Will AI replace me?” প্রশ্নটি শুধু প্রযুক্তি নয়, মানুষের ভবিষ্যতের নিরাপত্তাবোধের সঙ্গে জড়িয়ে গেছে।
  • এআই পরিবর্তন আনছে পেশা ও কর্মসংস্থানের ধরণে—এতে আতঙ্ক যেমন রয়েছে, তেমনি সম্ভাবনাও।
  • সময় এখনই—এআই-কে ভয় না পেয়ে, তাকে বুঝে কাজে লাগানোর।