বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: রাজনীতির মাঠে পালাবদলের হাওয়ায় দীর্ঘ ১৭ বছর পর নির্বাচনে ফিরছেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তবে কেবল রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তনই নয়, এই দীর্ঘ সময়ে তাঁর ব্যক্তিগত আর্থিক চিত্রেও এসেছে নাটকীয় পরিবর্তন। ২০০৮ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে এসে তাঁর বার্ষিক আয় বেড়েছে প্রায় ১২ গুণ।
এক সময় কোটি টাকার ঋণের ভার থাকলেও, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা বলছে—তিনি এখন পুরোপুরি ঋণমুক্ত।
আয়ের পারদ ঊর্ধ্বমুখী
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় আমীর খসরুর বার্ষিক আয় ছিল মাত্র ১৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অথচ ২০২৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাঁর বর্তমান বার্ষিক আয় দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৬৩ হাজার ৪২৪ টাকা। ১৭ বছরের ব্যবধানে আয় বেড়েছে ১ কোটি ৪৬ লাখ টাকারও বেশি।
আয়ের খাতের তুলনামূলক চিত্র:
২০০৮ সাল: প্রধান উৎস ছিল বাড়ি ভাড়া (১.৩ লাখ) ও পরামর্শক ফি।
২০২৫ সাল: আয়ের ডালপালা ছড়িয়েছে বহুগুণ। এর মধ্যে কনকর্ডের সঙ্গে ‘সাইনিং মানি’ বাবদ এককালীন ৮০ লাখ টাকা, শেয়ার ও ব্যাংক আমানত থেকে ৩৬ লাখ ২৯ হাজার টাকা এবং আলফা সিকিউরিটিজের শেয়ার থেকে আয় হয়েছে ৩৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
মামলা ও ঋণের বেড়াজাল মুক্ত
আমীর খসরুর হলফনামার সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক দিকটি সম্ভবত তাঁর আইনি ও আর্থিক দায়মুক্তি। গত দুই বছরে তিনি ৩৪টি মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। এর পাশাপাশি, ২০০৮ সালে তাঁর কাঁধে ঋণের বোঝা থাকলেও বর্তমানে তিনি নিজেকে একজন সম্পূর্ণ ঋণমুক্ত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পাহাড়
হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বর্তমানে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মোট স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২২ কোটি টাকা। আয়ের বড় একটি অংশ এখন আসছে বাণিজ্যিক স্থাপনার ভাড়া এবং শেয়ার বাজারের বিনিয়োগ থেকে, যা তাঁর আর্থিক ভিত্তিকে আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে।
দীর্ঘ সময় ক্ষমতার বাইরে থাকলেও আমীর খসরুর এই অভাবনীয় আর্থিক প্রবৃদ্ধি রাজনৈতিক মহলে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মূলত আবাসন খাতের বড় চুক্তি (সাইনিং মানি) এবং শেয়ার বাজারের কৌশলগত বিনিয়োগই তাঁকে এই ‘ম্যাজিকাল’ ফিগার অর্জনে সহায়তা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।










