বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, যশোর: যশোরে ‘আয়নাবাজি’ সিনেমার মতোই ঘটনা ঘটেছে, যেখানে মামার পরিবর্তে ভাগনে আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে কারাগারে পৌঁছেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে এ ঘটনা ধরা পড়ে। কারা কর্তৃপক্ষ আসামির নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাই করার সময় মিথ্যাচারণ স্পষ্ট হয়ে যায়। পরে আসামি মো. শামীম আহম্মেদ (২৭) বিষয়টি স্বীকার করেন।
শামীম যশোর সদর উপজেলার ভেকুটিয়া গ্রামের জামশেদ আলীর ছেলে। তিনি তার আপন ছোট মামা হাসানের (বড় ভেকুটিয়া গ্রামের মন্টুর ছেলে) পক্ষে আদালতে হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলা কর্মকর্তা আবিদ আহম্মেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কারাগারের সূত্রে জানা গেছে, হাসানের বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বর ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। মামলার ধারা: ৪৪৮/৩২৩/৩৫৪/৩৮৪/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ দ. বি। এর আগে শামীম ৩–৪ বার মামার পরিবর্তে আদালতে হাজিরা দিয়েছেন। কিন্তু মঙ্গলবার অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত শামীমকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
শামীমকে কারাগারে নেওয়ার পর তার নাম, পিতার নাম এবং ঠিকানা যাচাই করার সময় তার কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় সন্দেহ জন্মে। চতুরঙ্গ ও সিস্টেমের মাধ্যমে তার ফিঙ্গার প্রিন্ট শনাক্ত হয় (এনআইডি নং-১৯৫৫১৪৭৪৪০), যা নিশ্চিত করে আসলেই তিনি শামীম। জিজ্ঞাসাবাদে শামীম স্বীকার করেন, তিনি হাসানের বদলে আদালতে হাজিরা দিয়েছেন।
কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আদালতে প্রতিবেদন আকারে পাঠিয়েছে। এখন আদালতের নির্দেশে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হতে পারে এবং মূল আসামি হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হতে পারে।
উল্লেখযোগ্য যে, এই ঘটনাটি জনপ্রিয় সিনেমা ‘আয়নাবাজি’র গল্পের মতোই—যেখানে কেউ অন্যের পরিচয় ব্যবহার করে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে পড়েন। বাস্তব জীবনে এই ঘটনা আমাদের সতর্ক করে যে, আইনকে এভাবে প্রহসন করার চেষ্টা মারাত্মক ফলাফল ডেকে আনতে পারে।