হেলথ ডেস্ক: যুক্তরাজ্যে প্রায় এক কোটি মানুষ আর্থ্রাইটিসে ভুগছেন। বয়সে তরুণ থেকে প্রবীণ—সবারই হতে পারে এ রোগ। শতাধিক ধরনের আর্থ্রাইটিস আছে, যার মধ্যে অস্টিওআর্থ্রাইটিস সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এ রোগে ব্যথা, ফোলা ও জড়তার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, খাদ্যাভ্যাস আর্থ্রাইটিস নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যদিও বিষয়টি অনেক সময় ভুলভাবে বোঝা হয়।
লন্ডন অস্টিওপোরোসিস ক্লিনিকের পরামর্শক রিউমাটোলজিস্ট ডা. তাহের মাহমুদ জানান, অনেক খাবার শরীরে প্রদাহ বাড়িয়ে আর্থ্রাইটিসকে জটিল করে তুলতে পারে। কারও ক্ষেত্রে কোনো খাবার বেশি ক্ষতি করতে পারে, আবার অন্য কারও ক্ষেত্রে কম। এজন্য খাবারের প্রতি সংবেদনশীলতা বুঝতে খাদ্য ডায়েরি রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
যেসব খাবার বাড়াতে পারে আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু খাবার শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করে আর্থ্রাইটিসের ব্যথা ও অস্বস্তি বাড়িয়ে তোলে। এসবের মধ্যে রয়েছে—
তেল-চর্বিযুক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার: মাংস, মাখন, পনির, ফাস্টফুড ইত্যাদিতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে, যা জয়েন্টে চাপ বাড়ায়।
অতিরিক্ত চিনি: ওজন বাড়ায়, প্রদাহ বাড়ায় এবং অস্টিওআর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
প্রসেসড ও লাল মাংস: এতে প্রদাহ সৃষ্টিকারী উপাদান বেশি থাকে।
এজ (AGE) সমৃদ্ধ খাবার: ভাজা বা গ্রিল করা মাংস, মায়োনিজ, মাখন ইত্যাদি শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ায়।
সামুদ্রিক খাবার: ঝিনুক, শামুক ইত্যাদি গাউট বাড়ায়। পরিবর্তে স্যামন বা সার্ডিন জাতীয় মাছ খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
গ্লুটেন সমৃদ্ধ খাবার: রুটি, বিস্কুট, বিয়ার ইত্যাদি কিছু মানুষের প্রদাহ বাড়াতে পারে।
পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট: সাদা ভাত, সাদা পাউরুটি, পাস্তা, পেস্ট্রি।
মদ্যপান: বিশেষ করে বিয়ার ও সাইডার, যা ইউরিক এসিড জমিয়ে গাউটের ঝুঁকি বাড়ায়।
ভেজিটেবল অয়েল: সূর্যমুখী, সয়াবিন বা চিনাবাদাম তেলে ওমেগা-৬ বেশি থাকে। পরিবর্তে ফ্ল্যাক্সসিড তেল ভালো।
নাইটশেড সবজি: টমেটো, আলু, বেগুন ও মরিচ কিছু মানুষের ব্যথা বাড়াতে পারে।
উচ্চ-চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার: মাখন ও পনির প্রদাহ বাড়ায়, তবে দই ও কেফির তুলনামূলক নিরাপদ।
লবণাক্ত খাবার: প্রসেসড খাবার, আচার ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিত।
চিকিৎসকেরা বলছেন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও ওজন নিয়ন্ত্রণ আর্থ্রাইটিসের ব্যথা অনেকটাই কমাতে সাহায্য করে।
👉 যদি প্রতিবেদনটি তথ্যবহুল মনে হয়, লাইক ও শেয়ার করুন, যাতে আরও মানুষ উপকৃত হতে পারেন।