সরেজমিন প্রতিবেদন
১ বিঘা জমির আলু ওঠানোর জন্য ৫-৬ জন শ্রমিক প্রয়োজন। যেখানে প্রতি শ্রমিকের মূল্য ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আর প্রতি বিঘা জমিতে আলু হয় ৪৫ থেকে ৫০ বস্তা । জমি থেকে আড়তে আলু পৌছাতে প্রতি বস্তায় ভ্যান ভাড়া দিতে হয় ৩০ থেকে ৬০ টাকা। বীজ আলু, সার, জমি চাষ, সেচ, কীটনাশক,শ্রমিক সব কিছু হিসাব করলে দেখা যায় যে আমাদের প্রতি বিঘা জমিতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লোকসান।
মো. খোকন হোসেন (জাকির), জয়পুরহাট থেকে: প্রতিদিনই কমছে আলুর দাম। ভালো ফলন হলেও বাজারে দাম না থাকায় লোকসানের মুখে পড়ছে জয়পুরহাট জেলার আলু চাষিরা। বর্তমানে স্থানীয়ভাবে প্রতিকেজি আলু পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৮ টাকা। ফলে খরচের তুলনায় লোকসান বেড়ে যাওয়ায় দিশেহারা চাষিরা।
লোকসান থেকে বাঁচতে আলু রফতানি ও মূল্য নির্ধারণ করতে সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে চাষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
রবিবার জেলার বিভিন্ন গ্রামে গঞ্জে পাইকারি ক্রেতাদের আড়তে আলু বিক্রি করতে আসা চাষিরা জানান, শনিবার যে আলু মণ ছিল ৩২০ টাকা, তা রবিবারের বাজারে ৩০০ টাকা। ২২০ টাকার আলু ২০০ টাকা। এভাবে দিনদিন আলুর দাম কমেই যাচ্ছে। সেখানে রোমানা পাকরি (লাল) বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা মণ। যা কেজিতে সাড়ে ৭ টাকা। বট পাকরি (লাল) মিউজিকা আলু বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকা মণ। যা কেজিতে ৮ টাকা। গ্রেনোলা আলু প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা। যা কেজিতে ৫ টাকা।
আলুর পাইকারি ক্রেতারা বলেন, আলুর বাজার একদিন আগে দাম যা ছিল,পরেরদিন তা থাকছে না। দাম হুহু করে কমে যাচ্ছে। আমরা যেসব আলু কিনছি এসব আলু ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মোকামে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাঁচাবাজারের মূল্য সঠিকভাবে বলা যায় না। কিন্তু আলুর বাজার একেবারেই উঠছে না।
বাজারে গ্রানোলা আলু বিক্রি করতে আসা চাষিরা বলেন, বিঘায় ফলন হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ মণ। আলু চাষে জমিতে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাজার হিসেবে আলু বিক্রি করলে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা বিক্রি সম্ভব। এতে আমাদের বিশাল লোকসান গুণতে হচ্ছে। লোকসান এড়াতে আলু সরকারিভাবে রফতানি ও দাম নির্ধারণ করতে সরকারের প্রতি তাদের অনুরোধ।
জয়পুরহাট উপজেলার ধাড়কী গ্রামের আলু চাষি নবীন আকন্দ বলেন, ১ বিঘা জমির আলু ওঠানোর জন্য ৫-৬ জন শ্রমিক প্রয়োজন। যেখানে প্রতি শ্রমিকের মূল্য ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। আর প্রতি বিঘা জমিতে আলু হয় ৪৫ থেকে ৫০ বস্তা । জমি থেকে আড়তে আলু পৌছাতে প্রতি বস্তায় ভ্যান ভাড়া দিতে হয় ৩০ থেকে ৬০ টাকা। বীজ আলু, সার, জমি চাষ, সেচ, কীটনাশক,শ্রমিক সব কিছু হিসাব করলে দেখা যায় যে আমাদের প্রতি বিঘা জমিতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লোকসান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যে, জেলায় এবার ৪০ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ৭ হাজার ১০০ হেক্টর, পাঁচবিবিতে ৭ হাজার, কালাইয়ে ১১ হাজার ১০০, ক্ষেতলালে ৯ হাজার এবং আক্কেলপুরে ৬ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি। কিন্তু ৪০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আলুর অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়িয়েছে।
জেলা কৃষি বিপণন বিভাগের মাঠ ও বাজার পরিদর্শক মো. সাখওয়াত হোসেন বলেন, এখন আলুর ভর মৌসুম চলছে। সকল চাষিরাই আলু উত্তোলনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এবার আলুর ফলন ভালো হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় বেশি। এজন্য আলু দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে ন।