মো. আজিজার রহমান,খানসামা (দিনাজপুর) : এবার উত্তরবঙ্গে আলুর দাম খোলা বাজারে অনেক বেশি, তাই খানসামা উপজেলায় আগাম আলু চাষের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম জাতের ধান কেটে গ্র্যানুল্যা, স্টোরিজ, সেভেন জাতের আলুসহ মাঠের পর মাঠ বিভিন্ন জাতের আলু রোপণ করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় চলতি বছর ২ হাজার ২৬০ হেক্টর জতিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৫ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষ করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এক হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপণের সম্ভাবনা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দ্বিগুণ লাভের আশায় মাঠে মাঠে চলছে জমি প্রস্তুত ও আলু রোপণের কাজ। অনেকে জমি তৈরি, আগাছা পরিষ্কার ও বীজ সংগ্রহ করছেন আলু চাষীরা।
চাষীদের কয়েকজন বললেন, গত বছর আগাম আলু উত্তোলন করে ৩০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। আর যখন কৃষকদের কাছে আলু ছিল না, সব ব্যবসায়ীদের কাছে তখন দাম দ্বিগুণ হয়। তাই বেশি জমিতে ৫৫ থেকে ৬০ দিনে উত্তোলনযোগ্য সেভেন জাতের আলু রোপণ করছি। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় গতবারের চেয়ে ভালো ফলনের আশা করছি।
খামারপাড়া ইউনিয়নের নেউলা গ্রামের আবু তাহের তিন বিঘা, কায়েমপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম এক বিঘা, জনাব আলী দেড় বিঘা ও আরিফুল দুই বিঘা জমিতে আগাম আলু রোপণের প্রস্তুতি নিয়েছেন।
আলু চাষি আবু তাহের বলেন, আমাদের এলাকার মাটি উঁচু এবং বালু মিশ্রিত হওয়ায় বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে আগাম আলু চাষে তেমন কোনও ভয় থাকে না। ফলনও ভালো হয়। উৎপাদিত আলু রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে চড়া দামে বিক্রি করে লাভবান হওয়া যায়। অন্যান্য ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাপক অবদান রাখে আগাম আলু চাষ। যার আলু যত আগে উঠবে সেই কৃষক তত ভালো দাম পাবেন। তাই সবাই লাভের আশায় আগাম জাতের আলু চাষে মাঠে কাজ করছি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ.ম জাহিদুল ইসলাম বলেন, আলু চাষিরা নিজেরাই প্রতিবছর বীজ সংরক্ষণ করে রাখেন। অনেকে আবার বাজার থেকে বীজ কিনে রোপণ করেন। তুলনামূলক উঁচু জমিগুলোতে আলু চাষ শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত মুনাফার আশায় অনেকে তাদের জমিতে আলু চাষ শুরু করেছেন। আমরা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, এ উপজেলার মাটি আগাম আলু চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাঠের পর মাঠ আগাম আলু চাষে মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা। প্রতিবছর এ এলাকার কৃষক আগাম আলু চাষ করে লাভবান হন। আমাদের কৃষি অফিস থেকে আগাম আলু চাষে কৃষকদের বিভিন্ন সহযোগিতা করে থাকি।