মাহবুবুল হক, মাস্কাট ( ওমান ): ওমানের ধোফার প্রদেশ এখন এক অভাবনীয় রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা খরিফ মৌসুমে শুষ্ক মরু অঞ্চলের সালালাহ শহর যেন হয়ে ওঠে এক সবুজ স্বর্গ। মেঘে ঢাকা পাহাড়, মৌসুমি ঝরনা আর ঠান্ডা বাতাসে মোড়া এক প্রাকৃতিক বিস্ময়। এই সময়টাই পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয়, আর সেই সুযোগে বাড়ছে ওমানের ইকো-ট্যুরিজমের গুরুত্ব।
এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে মিল রেখে গড়ে উঠেছে হাওয়াানা সালালাহ—ধোফারের বুকে এক একীভূত পর্যটন কেন্দ্র, যা সৌন্দর্য ও মান বজায় রেখে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগের এক অনন্য উদাহরণ। হাওয়াানা সালালাহ-তে রয়েছে চারটি বিলাসবহুল হোটেল: ফানার হোটেল অ্যান্ড রেসিডেন্স, সালালাহ রোটানা রিসোর্ট, দ্য ক্লাব বাই ফানার, এবং জুয়েইরা বুটিক হোটেল।
তবে এখানে অতিথিরা শুধু বিলাসবহুল আবাসনেই সীমাবদ্ধ থাকেন না। তারা ঘুরে দেখেন ওয়াদি দারবাত, আইন আতহুম কিংবা ইউনেস্কো ঘোষিত ঐতিহাসিক স্থান সুমহুরাম ও আল-বালিদ। সেই সঙ্গে মুগসাইলের পাহাড়ি খাড়া খাড়া গিরিপথ ও বিস্ময়কর ব্লো-হোল-এর মতো অ্যাডভেঞ্চারও তাদের জন্য অপেক্ষা করে।
খরিফ মৌসুমে বেড়ে যায় ভ্রমণপ্রেমীদের আনাগোনা, আর তাই সালালাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সরাসরি ফ্লাইট চালু করেছে বিভিন্ন জিসিসি দেশের বিমান সংস্থা। সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে সপ্তাহে আটটিরও বেশি ফ্লাইট ছাড়াও জেদ্দা, দাম্মাম, মদিনা, তাইফ ও আবহা থেকে নিয়মিত ফ্লাইট চলছে। ফ্লাইট পরিচালনায় রয়েছে সৌদিয়া, ফ্লাইনাস, ফ্লাইএডিল, ওমান এয়ার ও সালামএয়ার। এছাড়া কুয়েত, দোহা, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেও রয়েছে সরাসরি সংযোগ।
সালালাহ রোটানা রিসোর্টের জেনারেল ম্যানেজার আহমেদ আফিফি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধু বিলাসবহুল সেবা নয়, বরং অতিথিদের কাছে ধোফার সংস্কৃতি ও ওমানি আতিথেয়তার আসল চিত্র তুলে ধরা।” তার ভাষায়, “রন্ধনশৈলী, স্থাপত্য আর আমাদের কর্মীদের আন্তরিক ব্যবহারই আমাদের বৈশিষ্ট্য। অতিথির হাসিই আমাদের সাফল্যের মানদণ্ড।”
হাওয়াানা সালালাহ প্রকল্পটি ওমান সরকারের ও বেসরকারি বিনিয়োগের যৌথ প্রচেষ্টায় বাস্তবায়িত হয়েছে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে গতি এনেছে এবং ওমানে টেকসই পর্যটনের একটি রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে ওমান আজ গ্রীষ্মকালীন পর্যটনের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠছে উপসাগরীয় অঞ্চল ও আরব পর্যটন মানচিত্রে।