বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, বরগুনা: ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর বরগুনায় ভুয়া পরিচয় দিয়ে ফুলেফেঁপে উঠেছেন মো. সরোয়ার (৩৩)। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতা সেজে বিভিন্ন দপ্তরে প্রভাব বিস্তার করে অবৈধভাবে গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ।
অভিযোগ রয়েছে, বরগুনা এলজিইডি অফিস, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের বদলি তদবির করেমোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। নিজেকে কখনো এনসিপির সমন্বয়ক, আবার কখনো ভিন্ন নামে পরিচয় দিয়ে পরিচিত করিয়েছেন। স্থানীয়দের দাবি, সরোয়ার কখনো সোহাগ, কখনো স্বপন, আবার কখনো সুমন নামে পরিচয় দেন।
জানা গেছে, বর্তমানে বরগুনা জনস্বাস্থ্য বিভাগে বৈধ লাইসেন্স না থাকায় ভাড়াকৃত লাইসেন্স ব্যবহার করে তিনটি কাজ নিয়েছেন সরোয়ার। প্রায় অর্ধকোটি টাকার এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৫০টি গভীর নলকূপ ও একটি লেট্রিন নির্মাণ কাজ।
এছাড়া তার অতীত ইতিহাসও বিতর্কিত। স্থানীয়রা জানান, চান্দখালী কদভানু মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক থাকা অবস্থায় ২০২২ সালে দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয় (মামলা নং-১১, বেতাগী থানা)। পরে শিক্ষা বোর্ডের সিদ্ধান্তে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরগুনা জেলা নেতা রেজাউল করিম বলেন, “সরোয়ার নামের কোনো ব্যক্তি এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে নেই। গত ৫ আগস্টের পর থেকে এরকম অনেক ভুয়া নেতা বের হয়েছে, যারা মানুষকে হয়রানি করে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করছে। এদের দ্রুত আইনের হাতে তুলে দিতে হবে।”
অন্যদিকে, অভিযোগের বিষয়ে মো. সরোয়ার জানান, তিনি কোনো এনসিপি নেতা নন। বরং একটি মাদ্রাসার শিক্ষক ও স্থানীয়ভাবে পরিচিত মুখ। তার ভাষ্য, “আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি সামান্য লেখালেখি করি, সবাই আমাকে চেনে।”
স্থানীয়রা বলছেন, সরোয়ারের মতো ভুয়া পরিচয়ধারী প্রতারকদের কারণে সরকারি দপ্তরের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। প্রশাসনের প্রতি দাবি অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক।