Home শিপিং এমএসসি অ্যানটোনিয়া এখনও আটকে, জেনারেল অ্যাভারেজ ঘোষণার শঙ্কা

এমএসসি অ্যানটোনিয়া এখনও আটকে, জেনারেল অ্যাভারেজ ঘোষণার শঙ্কা

বিশ্লেষকদের মতে, লোহিত সাগরের ওই অংশে ইদানীং জিপিএস সংকেতে হস্তক্ষেপের ঘটনা বেড়েছে, যা সামুদ্রিক নৌযানগুলোর জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।

শিপিং ডেস্ক: লোহিত সাগরের জেদ্দা উপকূলে আটকে পড়া বিশাল কন্টেইনারবাহী জাহাজ এমএসসি অ্যানটোনিয়া এখনো সমুদ্রতল থেকে সরানো সম্ভব হয়নি। দুর্ঘটনার ১৮ দিন পার হলেও উদ্ধার অভিযান কার্যকর ফল আনতে পারেনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জাহাজটি মুক্ত করতে সময় লাগতে পারে আরও বহুদিন, এমনকি এই ঘটনায় ঘোষণা আসতে পারে ‘জেনারেল অ্যাভারেজ’।

১০ মে স্থানীয় সময় বিকালে ৩০৪ মিটার দীর্ঘ এবং প্রায় ৭ হাজার কন্টেইনার ধারণক্ষমতার এমএসসি অ্যানটোনিয়া জেদ্দা বন্দরের কাছাকাছি ‘এলিজা শোয়ালস’ এলাকায় আটকে যায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল, নেভিগেশনজনিত কোনো ত্রুটির কারণে জাহাজটি ভুল পথে চলে যায়। তবে পরে সামুদ্রিক সাইবার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানায়, এটি সম্ভবত ‘জিপিএস স্পুফিং’ অথবা সিগন্যাল জ্যামিংয়ের শিকার হয়েছিল।

বিশ্লেষকদের মতে, লোহিত সাগরের ওই অংশে ইদানীং জিপিএস সংকেতে হস্তক্ষেপের ঘটনা বেড়েছে, যা সামুদ্রিক নৌযানগুলোর জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।

উদ্ধারে নিযুক্ত টাগবোটগুলো এখনও জাহাজটি সরাতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলে দেরি হওয়ায় বহু কন্টেইনারের মালিকপক্ষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে লন্ডনভিত্তিক বীমা কোম্পানি ‘ডব্লিউ ই কক্স ক্লেইমস গ্রুপ’ তাদের ওয়েবসাইটে সম্ভাব্য জেনারেল অ্যাভারেজ ঘোষণা নিয়ে একটি সতর্কবার্তা প্রকাশ করেছে।

জেনারেল অ্যাভারেজ একটি সামুদ্রিক বাণিজ্যিক নীতি, যার অধীনে দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি সব মালিকপক্ষ মিলে ভাগাভাগি করে বহন করে। এই নীতির আওতায় কন্টেইনার মালিকদের ক্ষতিপূরণ দাবি করার আগে নিজ নিজ অংশের ক্ষতির দায় বহন করতে হতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা বৈশ্বিক সামুদ্রিক নিরাপত্তা, কন্টেইনার পরিবহন ও বীমা খাতে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে যখন জাহাজটি বিশ্বের অন্যতম বড় অপারেটর, এমএসসি-র মালিকানাধীন।

লোহিত সাগরের মতো গুরুত্বপূর্ণ নৌপথে এমন দুর্ঘটনা বিশ্ব বাণিজ্যে প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষত এই পথ দিয়ে ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে প্রতিদিন হাজারো জাহাজ যাতায়াত করে। সুতরাং এমএসসি অ্যানটোনিয়ার আটকে পড়া শুধু একটি জাহাজের সমস্যা নয়, বরং এটি সামগ্রিক মেরিটাইম নিরাপত্তার সংকেত।

♦প্রতিবেদনটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে শেয়ার করুন আপনার বন্ধু, সহকর্মী বা নৌপরিবহন খাতের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে।
আপনার একটি শেয়ার অন্যকেও সচেতন করতে পারে।