এভিয়েশন ডেস্ক: আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রীসেবা দিতে গিয়ে ফের বিতর্কে জড়াল এয়ার ইন্ডিয়া। সান ফ্রান্সিসকো থেকে কলকাতা হয়ে মুম্বইগামী একটি দীর্ঘপথের বিমানে মাঝরাতে দেখা দেয় ইঞ্জিনের ত্রুটি। বোয়িং ৭৭৭-২০০ এলআর মডেলের বিমানটি নির্ধারিত সময় মতো কলকাতায় নামলেও দ্বিতীয় দফার যাত্রায় ঘটে বিপত্তি। বাঁ দিকের ইঞ্জিনে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দেওয়ায় যাত্রীদের নামিয়ে বিমানটি রেখে দেওয়া হয় দমদম বিমানবন্দরের টারম্যাকে।
বিমানটি সোমবার রাত পৌনে ১টার দিকে কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে রাত ২টায় মুম্বইয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও একটানা কয়েক ঘণ্টা বিমানটিকে আটকে রাখতে হয়। ত্রুটির কথা প্রথমে যাত্রীদের জানানো না হলেও পরে পাইলটের ঘোষণায় জানানো হয়—বিমানের ইঞ্জিনে নিরাপত্তাজনিত সমস্যা ধরা পড়েছে, আর সেই কারণেই যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।
ভোর ৫টা ২০ মিনিট নাগাদ নামিয়ে দেওয়া হয় সব যাত্রীকে। এক যাত্রী জানান, “আমরা ভাবছিলাম, কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমান ছাড়বে। কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে গেল। শেষে জানানো হলো ইঞ্জিনে সমস্যা হয়েছে।”
বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা বলেন, “বিমানটির বাঁ পাশের ইঞ্জিনে অস্বাভাবিক শব্দ ও কম্পন লক্ষ্য করা যায়। এরপরই উড়ান স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।” এয়ার ইন্ডিয়ার টেকনিক্যাল টিম এ মুহূর্তে ইঞ্জিনের ত্রুটি পর্যালোচনা করছে।
এর আগেও গত ১২ জুন এবং ১৬ জুন এয়ার ইন্ডিয়ার দুটি ভিন্ন উড়ানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল। জুনের শুরুতেই অহমদাবাদ থেকে উড্ডয়নের কিছু পরেই বিধ্বস্ত হয় একটি উড়ান, যেখানে প্রাণ হারান বহু যাত্রী। এরপর হিন্দন বিমানবন্দর থেকেও উড়ান শুরুর আগেই ত্রুটি ধরা পড়ে এক্সপ্রেস ফ্লাইটে।
বারবারের এমন ঘটনায় যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। একাধিক উড়ানে যান্ত্রিক গোলযোগ ধরা পড়ায় এয়ার ইন্ডিয়ার রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।
এয়ার ইন্ডিয়া যদিও বলছে, “প্রতিটি ঘটনা আলাদা করে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যাত্রী নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।” তবে এই আশ্বাসেও যাত্রীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কাটছে না।