Home আকাশ পথ টিকিট-পাসপোর্ট ছাড়া লাহোর থেকে সৌদি! কে দিল ছাড়পত্র?

টিকিট-পাসপোর্ট ছাড়া লাহোর থেকে সৌদি! কে দিল ছাড়পত্র?

 এভিয়েশন ডেস্ক: না টিকিট। না বোর্ডিং পাস। না পাসপোর্ট। এমনকি ভিসাও ছিল না। তা সত্ত্বেও একজন পাকিস্তানি নাগরিক কীভাবে লাহোর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে উঠে জেদ্দা পৌঁছে গেলেন? চমকে উঠছে সবাই। কারণ পুরো বিষয়টি শুধু এক যাত্রীর নিরাপত্তার প্রশ্ন নয়, বরং দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভয়াবহ গাফিলতির প্রতিচ্ছবি।

মালিক শাহজাইন আহমেদ নামের ওই ব্যক্তি ৮ জুলাই লাহোর থেকে করাচি যাওয়ার জন্য এয়ার সিয়ালের একটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে টিকিট কাটেন। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে, তিনি সেই ফ্লাইটে ওঠেননি। বরং পাসপোর্ট, ভিসা বা বোর্ডিং পাস ছাড়াই উঠে পড়েন এয়ার সিয়ালের একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে, গন্তব্য সৌদি আরবের জেদ্দা।

জেদ্দায় পৌঁছানোর পর সৌদি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে। তারা দেখে, তার কাছে পাসপোর্ট তো নেই-ই, এমনকি সৌদি আরব প্রবেশের কোনো বৈধ কাগজপত্রও নেই। পরে তাকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়। করাচি ফেরার খরচও তাকে নিজেই বহন করতে হয়।

ঘটনার পর মালিক শাহজাইন সিন্ধ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, “আমি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভেতরে কীভাবে প্রবেশ করলাম, এটা বোঝাই যাচ্ছে না। কারা আমাকে ছাড়পত্র দিল, কারা চোখ বুজে আমাকে বিমানে উঠতে দিল?”

তিনি প্রশ্ন তোলেন—“একজন যাত্রী কীভাবে ইমিগ্রেশন অতিক্রম করে, টার্মিনাল বদলে আন্তর্জাতিক গেট পর্যন্ত পৌঁছে যায়? যদি কেউ চক্রান্ত করে থাকে, তাহলে সেটা তদন্ত না করে উপায় নেই। এটা শুধু আমার ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা নয়, বরং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার চরম ব্যর্থতা।”

আহমেদ বলেন, এই ঘটনার পেছনে যারা দায়ী, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া উচিত। তিনি একটি যৌথ তদন্ত কমিটি (জেআইটি) গঠনের দাবি জানিয়ে বলেন, যতদিন পর্যন্ত তদন্ত শেষ না হয়, ততদিন এয়ার সিয়ালের লাইসেন্স স্থগিত রাখা উচিত।

আইনি নোটিশে তিনি দাবি করেছেন, এয়ার সিয়াল তাকে কোনও সহযোগিতা করেনি, বরং হেনস্তা করেছে। মানসিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি তাকে আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছে।

পাকিস্তান এয়ারপোর্টস কর্তৃপক্ষ (পিএএ) জানিয়েছে, তারা বিষয়টি তদন্ত করছে এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (সিভিল অ্যাভিয়েশন) এয়ার সিয়ালের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

এই ঘটনায় মূল প্রশ্নটি থেকেই যাচ্ছে—কীভাবে একজন যাত্রী, যার কাছে কোনও টিকিট, বোর্ডিং পাস কিংবা ভিসা নেই, তিনি বিমানবন্দরের কড়াকড়ি নিরাপত্তা ও ইমিগ্রেশন পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বিমানে উঠে গেলেন? সেটি কেবল এয়ারলাইন্স নয়, গোটা বিমানবন্দর ব্যবস্থাপনার ওপরই এক গুরুতর প্রশ্নচিহ্ন।

এখন পর্যন্ত এয়ার সিয়াল এই ঘটনার ব্যাপারে কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি।


না টিকিট, না পাসপোর্ট—এমন একজন ব্যক্তি কীভাবে ইমিগ্রেশন ছাড়াই লাহোর থেকে সৌদি পৌঁছালেন, তা ঘিরে উঠেছে প্রশ্ন। এয়ার সিয়ালের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট, দাবি জেআইটি তদন্ত ও লাইসেন্স স্থগিত।