সহায়তাপ্রাপ্ত আত্মহত্যায় অবসান এক যুগের
বিনোদন ডেস্ক: জার্মান বিনোদন জগতের ইতিহাসে এক আবেগঘন অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল এলিস ও এলেন কেসলারের বিদায়ে। ৮৯ বছর বয়সে বিশ্বখ্যাত এই যমজ শিল্পী জার্মানির মিউনিখের নিকটবর্তী গ্রুনভাল্ডে সহায়তাপ্রাপ্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন গত ১৭ নভেম্বর। তাঁদের মৃত্যুর বিষয়টি পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্র এবং জার্মান সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত করেছে। সহায়তাপ্রাপ্ত আত্মহত্যা জার্মানিতে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কঠোর বিধিনিষেধ মেনে সম্পন্ন করা যায়।
পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ইউরোপীয় ক্যাবারে, নৃত্য ও মঞ্চজগতে কেসলার যমজ এক কিংবদন্তির নাম হয়ে ওঠেন। তাঁদের নিখুঁত একসঙ্গে নৃত্যভঙ্গি, মুগ্ধকর ব্যক্তিত্ব এবং সুশৃঙ্খল উপস্থাপনা জার্মান সংস্কৃতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল। তাঁদের উপস্থিতি ছিল আনন্দ, ছন্দ ও রুচিশীল বিনোদনের প্রতীক।
তাঁদের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হলে এলিস কেসলারের একটি মন্তব্য বিশেষভাবে আলোচনায় আসে। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবছিলেন। বয়স ও শারীরিক দুর্বলতা তাঁদের জীবনে নানা সীমাবদ্ধতা তৈরি করছিল, আর তাঁরা কারও উপর নির্ভর হয়ে বাঁচতে চাননি। তাঁর নিজের ভাষায়, “আমরা একসঙ্গে জন্মেছি, একসঙ্গে জীবন কাটিয়েছি, তাই বিদায়ও নিলাম একসঙ্গে।”
এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে জার্মান সমাজে নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ তাঁদের আত্মমর্যাদা বজায় রেখে শেষ বিদায় নেওয়ার সাহসকে সম্মান জানাচ্ছেন। আবার কেউ সহায়তাপ্রাপ্ত মৃত্যুর নৈতিকতা নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত। তবে সকলেই সম্মত যে, কেসলার যমজ শুধু শিল্পী ছিলেন না, তাঁরা ছিলেন এক যুগের সাংস্কৃতিক প্রতীক।
তাঁদের মৃত্যু স্মরণ করিয়ে দিয়েছে বয়সজনিত বাস্তবতা, শিল্পীর ব্যক্তিগত সংগ্রাম এবং মর্যাদাপূর্ণ বিদায়ের চিরন্তন প্রশ্ন। তাঁদের নৃত্য, সৌন্দর্য, শৈলী ও দৃঢ়তা জার্মান বিনোদন ইতিহাসে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।
কেসলার যমজ বোনদের প্রস্থান শুধু এক যুগের সমাপ্তি নয়, বরং এক শিল্পীত জীবনের মর্যাদাপূর্ণ পরিসমাপ্তি। তাঁদের রেখে যাওয়া উত্তরাধিকার যুগে যুগে আলো ছড়িয়ে যাবে।
সহায়তাপ্রাপ্ত আত্মহত্যা বলতে বোঝায় এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে একজন অসুস্থ বা শারীরিকভাবে দুর্বল ব্যক্তি নিজের জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন এবং সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে একজন চিকিৎসক বা অনুমোদিত সংস্থার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় সহায়তা পান।
এটি কোনো দেশে অবৈধ, আবার কিছু দেশে বিশেষ আইনি ও নৈতিক শর্ত পূরণ সাপেক্ষে অনুমোদিত।










