Home আন্তর্জাতিক অবশেষে দুবাইতে অগ্নিদগ্ধ জাহাজ ওয়ান হাই ৫০৩

অবশেষে দুবাইতে অগ্নিদগ্ধ জাহাজ ওয়ান হাই ৫০৩

শিপিং ডেস্ক: অবশেষে নিরাপদ আশ্রয় মিললো অগ্নিদগ্ধ কনটেইনার জাহাজ ওয়ান হাই ৫০৩-এর। তিন মাস সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানোর পর সিঙ্গাপুর-নিবন্ধিত এই জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) জেবেল আলি বন্দরে ভিড়েছে।
পেছনের ঘটনা

চলতি বছরের জুনে ভারতের কেরালা উপকূলের কাছে জাহাজটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন নেভানো সম্ভব হলেও জাহাজটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চালানোর অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এরপর থেকে জাহাজটির জন্য নিরাপদ বন্দরের খোঁজ শুরু হয়।

কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন থেকে জাহাজটি সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেয়। শ্রীলঙ্কা ও মালয়েশিয়াতেও আশ্রয় পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ অনিশ্চয়তার পর অবশেষে ইউএই কর্তৃপক্ষ—ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং দুবাই পোর্টস অথরিটি—জাহাজটিকে জেবেল আলি বন্দরে ভিড়ার অনুমতি দেয়।

জেবেল আলি যাত্রা

প্রায় ১,৮০০ নটিক্যাল মাইল টেনে আনা হয় জাহাজটিকে। গালফ অব ওমান অতিক্রম করে পৌঁছানো এই যাত্রা ছিল দীর্ঘ ও জটিল। স্যালভেজ টিম জানিয়েছে, জাহাজটির কাঠামোগত স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং তাত্ক্ষণিক কোনো ঝুঁকি নেই।

ক্ষতির চিত্র

আগুনে সামনের দিকের হোল্ডে রাখা বেশিরভাগ কনটেইনার নষ্ট হয়ে গেছে। তবে জাহাজের পেছনের দিকে থাকা অনেক কনটেইনার অক্ষত রয়েছে। অক্টোবর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কনটেইনারগুলো পরীক্ষা ও আনলোড শুরু হবে বলে জানা গেছে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট

ওয়ান হাই ৫০৩-এর এই দীর্ঘ ভ্রমণ দেখিয়ে দিয়েছে সমুদ্রে দুর্ঘটনা মোকাবিলা কতটা কঠিন হতে পারে। একটি ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজের জন্য নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাওয়া সবসময় সহজ হয় না।

জীবনরক্ষা: সময়মতো নিরাপদ বন্দর না পেলে নাবিকদের জীবন বিপন্ন হয়।

পণ্য রক্ষা: কোটি কোটি ডলারের মালামাল অগ্নিকাণ্ডে বা দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রায় ধ্বংস হতে পারে।

আন্তর্জাতিক সহযোগিতা: স্যালভেজ টিম, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন দেশের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।

বৃহত্তর তাৎপর্য

বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের ৮০ শতাংশের বেশি সমুদ্রপথে হয়। এ অবস্থায় জাহাজ দুর্ঘটনা কেবল নির্দিষ্ট কোম্পানি বা দেশের নয়, বরং আন্তর্জাতিক সাপ্লাই চেইনের জন্যও বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করে। এজন্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্রে দুর্ঘটনাগ্রস্ত জাহাজের জন্য আরও বেশি “পোর্ট অব রিফিউজ” বা নিরাপদ বন্দরের ব্যবস্থা থাকা জরুরি।