আজহার মুনিম, লন্ডন: বৃটেনের ওয়েলসের রাজধানী কার্ডিফে পবিত্র ঈদ-উল-আদ্বহা ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে, বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে এবং হাজারো মুসল্লির অংশগ্রহণে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত হয়েছে। ৬ জুন শুক্রবার অনুষ্ঠিত এই উৎসবে আত্মত্যাগ ও মানবিক মূল্যবোধের মহান বার্তা হৃদয়ে ধারণ করে ঈদের নামাজ আদায় করেন স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির সদস্যরা।
ঈদের প্রথম জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হয় শাহ্ জালাল (রহ.) মসজিদ এন্ড ইসলামিক কালচারেল সেন্টারে। ইমামতি করেন মসজিদের খতীব মাওলানা কাজী ফয়জুর রহমান। দ্বিতীয় জামাত সকাল সাড়ে ৯টায় অনুষ্ঠিত হয়, যার ইমামতি করেন হাফিজ মাওলানা মিফতাউর রহমান কামিল। অপরদিকে রিভারসাইড জালালিয়া মসজিদ এন্ড ইসলামিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা আব্দুল মোক্তাদির এবং দ্বিতীয় জামাতে, সকাল ১০টায়, ইমামতি করেন হাফিজ মাওলানা জালাল উদ্দিন।
ঈদের খুৎবায় ইমামগণ বলেন, ঈদ-উল-আদ্বহা হলো আত্মত্যাগের প্রকৃষ্ট উদাহরণ, যা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.)-এর কুরবানির স্মৃতিকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এই কুরবানি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে নিজের কামনা-বাসনা বিসর্জনের শিক্ষা দেয় এবং একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর মহান আহ্বান জানায়।
শাহ্ জালাল (রহ.) মসজিদ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাসকুর আহমেদ চৌধুরী টুটুল এবং জালালিয়া মসজিদের চেয়ারম্যান লিলু মিয়া ও সেক্রেটারি মুহিবুর ইসলাম মায়া মুসল্লিদের ঈদের শুভেচ্ছা জানান। তারা মসজিদের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যেসব মানুষ অর্থ, সময় ও শ্রম দিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তাদের স্মরণ করে বলেন—তাঁদের অনন্য অবদানে আজ এই মসজিদসমূহ ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। প্রয়াতদের জন্য মাগফিরাত এবং জীবিতদের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করা হয়।
উভয় মসজিদের ইমামগণ ঈদের নামাজ শেষে দোয়ার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর শান্তি, বাংলাদেশের অগ্রগতি ও বিশ্বমানবতার কল্যাণ কামনা করেন।
এদিকে, ইউকে বিডি টিভির চেয়ারম্যান ও গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের কেন্দ্রীয় ফাউন্ডার্স কনভেনর, বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মকিস মনসুর ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ঈদ-উল-আদ্বহা মানুষের মধ্যে সাম্য, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করে। কুরবানির পশুর মাংস গরিব আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের মধ্যে বিতরণ করার মধ্য দিয়ে মানবিকতা ও সৌহার্দ্যের বন্ধন সুদৃঢ় হয়।
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত ঈদ-উল-আদ্বহার শিক্ষা আমাদের মধ্যে আত্মশুদ্ধি, সহমর্মিতা ও উদারতা ছড়িয়ে দিতে সহায়ক হবে। এই মহামিলনের দিনটি সবার জীবনে বয়ে আনুক শান্তি, কল্যাণ ও ঐক্য—এই কামনাই করেছেন তিনি।