প্রিয় নেত্রীর জানাজায় বিশেষ ব্যবস্থা
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: এক চিরকালীন লড়াইয়ের অবসানে আজ স্তব্ধ বাংলাদেশ। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, ‘আপসহীন’ জননী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে শুধু রাজনীতি নয়, বাংলার প্রতিটি ঘরে যেন শোকের মাতম। প্রিয় নেত্রীকে শেষবারের মতো একবার দেখার এবং তাঁর জানাজায় শরিক হওয়ার জন্য রাজধানীসহ সারা দেশের নারী সমাজ এক কাতারে দাঁড়িয়েছে।
জাতীয়তাবাদী রাজনীতির শীর্ষ এই নেত্রীর প্রতি নারীদের যে গভীর টান, তার প্রতি সম্মান জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানাজায় নারীদের অংশগ্রহণে গ্রহণ করেছে নজিরবিহীন প্রস্তুতি। আজ বাদ জোহর দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিতব্য জানাজায় নারীদের জন্য নির্দিষ্ট ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় নারীদের জন্য পৃথক এবং সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাতে ঘরের বাইরে এসেও তারা নিরাপদ পরিবেশে এবং ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে প্রিয় নেত্রীর শেষ বিদায়ের সাক্ষী হতে পারেন।
সকাল থেকেই দেখা গেছে বিভিন্ন বয়সী নারীর ভিড়। কেউ তারুণ্যের দিনগুলোতে বেগম জিয়ার সাহসী ভাষণ শুনে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন, কেউবা আবার তার মাতৃতুল্য মমতার গুণগ্রাহী। মিছিলে থাকা এক নারী কর্মী আবেগজড়িত কণ্ঠে বলেন, “তিনি শুধু আমাদের নেত্রী ছিলেন না, তিনি ছিলেন নারীদের সাহসের প্রতীক। আজ তাকে শেষ বিদায় জানাতে আসা আমাদের নাগরিক ও নৈতিক দায়িত্ব।”
শ্রদ্ধা জানাতে আসা লাখো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানাজায় অংশগ্রহণকারী সকলের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়েছে—নিরাপত্তাজনিত কারণে কেউ যেন কোনো প্রকার ব্যাগ বহন না করেন।
সংসদ ভবন এলাকা থেকে শুরু করে মানিক মিয়া এভিনিউ পর্যন্ত এখন শুধু মানুষের মাথা। তিল ধারণের ঠাঁই নেই কোথাও। সাদা শাড়ি আর কালো ব্যাজ পরে হাজারো নারী রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে অশ্রুসিক্ত নয়নে অপেক্ষা করছেন সেই মুহূর্তটির জন্য, যখন তাদের প্রিয় ‘আপসহীন’ নেত্রী শেষবারের মতো সংসদ ভবন এলাকা অতিক্রম করবেন।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নারীদের সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে বেগম জিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। আজ সেই কৃতজ্ঞতাবোধ থেকেই হয়তো ঘরের মায়া ছেড়ে হাজারো নারী রাজপথে নেমে এসেছেন। জানাজার এই বিশেষ ব্যবস্থা কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি দেশের প্রতিটি নারীর পক্ষ থেকে এক মহীয়সী নেত্রীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ।
আজ দুপুর ২টার পর যখন জানাজা শুরু হবে, তখন সংসদ ভবনের সবুজ চত্বর সাক্ষী হবে এক মহাকাব্যিক বিদায়ের, যেখানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের দীর্ঘশ্বাসও মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে বাংলার আকাশে।










