হাদি হত্যার বিচার দাবিতে উত্তাল চট্টগ্রাম
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: রাজধানী ঢাকার পর এবার ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান হাদির শাহাদাতে উত্তাল হয়ে উঠেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। গতকাল বিকেলে ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে গায়েবানা জানাজা এবং পরবর্তীতে নগরজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মশাল মিছিলের মাধ্যমে হাদি হত্যার বিচার ও সাম্রাজ্যবাদ প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে চট্টগ্রামের ছাত্র-জনতা।
শনিবার বিকেল ৪টায় ‘চট্টগ্রামের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে শরীফ ওসমান হাদির গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন কল্পোলোক আবাসিক জামে মসজিদের খতিব ইমরানুল হক সায়েম। জানাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ছাড়াও হাজার হাজার সাধারণ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে একটি বিশাল শোক মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নিউ মার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
জানাজা-পূর্ব সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ইবনে ওমর যায়েদ বলেন, “হাদি ভাইয়ের লড়াই ছিল সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এবং ইনসাফের পক্ষে। আমরা ফ্যাসিবাদ বিদায় করেছি, এখন কোনো সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যদি বাংলাদেশকে টার্গেট করতে চায়, তবে বাংলার জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিরোধ করবে।” তিনি সবাইকে যেকোনো উস্কানির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
জুলাই ঐক্যের আহ্বায়ক ইবনে হাসান জিয়াদ বলেন, “শহীদ হাদি ভাইয়ের আদর্শকে ধারণ করে আমরা তাঁর অসমাপ্ত দাবিগুলো সরকারের কাছে উত্থাপন করব।”
এর আগে দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে ‘এন্টি ফ্যাসিস্ট স্কোয়াড’-এর উদ্যোগে হাদির আরও একটি গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন জুলাই বিপ্লবের শহীদ মাহবুবুল হকের ছোট ভাই মঞ্জু মাহিম।
জানাজা শেষে এন্টি ফ্যাসিস্ট স্কোয়াডের মুখপাত্র রিদুয়ান হৃদয় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “হাদির জীবদ্দশায় যদি তাঁর সঠিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হতো, তবে আজ তাঁকে আমাদের হারাতে হতো না।” তিনি হাদির হত্যাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার আল্টিমেটাম দেন, অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
সন্ধ্যায় নগরের ২নং গেট সংলগ্ন বিপ্লব উদ্যানে জাতীয় নাগরিক কমিটি, যুবশক্তি, শ্রমিক শক্তি ও ছাত্রশক্তির উদ্যোগে এক বিশাল মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি জিইসি মোড় ঘুরে পুনরায় ২নং গেটে এসে শেষ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা হাদি হত্যার বিচার ও ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।
সব মিলিয়ে শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে চট্টগ্রামে এক শোকাতুর ও প্রতিবাদী পরিবেশ বিরাজ করছে। যেকোনো ধরণের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ ধরণের আরও গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে ভিজিট করুন www.businesstoday24.com









