বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, নাগেশ্বরী ( কুড়িগ্রাম ): নাগেশ্বরী উপজেলায় গোলাম রসুল রাজার বিরুদ্ধে জনরোষ চরমে পৌঁছেছে। ২৭ জুলাই দুপুরে উপজেলার পৌর ঈদগাহ মাঠ থেকে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা চত্বরে এসে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় এক প্রতিবাদী সমাবেশ। সমাবেশ শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিব্বির আহমেদের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেয়।
এই আন্দোলনের পটভূমিতে রয়েছে ২৩ জুলাইয়ের একটি পথসভা। সেদিন বেরুবারী ইউনিয়নে এক জনসভায় নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম রসুল রাজা বানিয়াপাড়া ও ভূষুটারী গ্রামের মানুষদের উদ্দেশ করে উত্তেজক বক্তব্য দেন। অভিযোগ রয়েছে, তিনি ঐ দুটি গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এ বক্তব্যে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ফলে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিক্ষোভে অংশ নেয়।
সমাবেশে মুকুল নামে এক বক্তা বলেন, বানিয়াপাড়া ও ভূষুটারী এলাকার মানুষ শান্তিপ্রিয় ও পরিশ্রমী। কেউ চাকরি করেন, কেউ দিনমজুর, কেউ বা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এমন একটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি মেনে নেওয়া যায় না।
আরেকজন বক্তা সৈয়দ আলী বলেন, নাগেশ্বরীর মানুষ বরাবরই শান্তিপ্রিয়। অথচ গোলাম রসুল রাজা নানা অপপ্রচার চালিয়ে পুরো উপজেলা অশান্ত করতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে তার দায় রাজাকেই নিতে হবে।
সমাবেশে উপস্থিত যুবক প্রজন্মের তরুণরা এক কণ্ঠে বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত গোলাম রসুল রাজা প্রকাশ্যে এসে ক্ষমা না চান, ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে। তারা বলেন, এখন এলাকাবাসী শুধু আতঙ্কে নয়, শিশু-কিশোরসহ সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ঘটনার বিষয়ে কথা হলে গোলাম রসুল রাজা বলেন, বেরুবারী ইউনিয়নের একজন স্থানীয় বাসিন্দাকে নিয়ে এক অপমানজনক ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তিনি রাগের বশে এমন কথা বলেন। তবে তিনি দাবি করেন, পরে তিনি সেই বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন এবং দলের পক্ষ থেকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ সোহেল হোসাইন কায়কোবাদও একই ধরনের বক্তব্য দিয়ে বলেন, নিরপেক্ষ তদন্তের ভিত্তিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনার পর থেকে নাগেশ্বরী উপজেলায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি ক্ষোভও দিন দিন বাড়ছে।