অভিযোগ: সংবিধানবহির্ভূত সিদ্ধান্তে ভোটাধিকার বঞ্চিত হাজারো সদস্য
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিয়োজিত প্রশাসক, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশাকে অপসারণ এবং নতুন নিরপেক্ষ প্রশাসক নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। সোমবার সকালে আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সামনে বৈষম্যবিরোধী ব্যবসায়ী ফোরামের ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ব্যবসায়ীরা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর চেম্বারের পরিচালনা পরিষদ পদত্যাগে বাধ্য হয়। এরপর প্রশাসক হিসেবে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ আনোয়ার পাশাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তার দায়িত্ব ছিল—সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের মতামত নিয়ে সদস্যপদ যাচাই-বাছাই ও নবায়নসহ প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে ৯০ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে তিনি দফায় দফায় নিজের মেয়াদ বাড়িয়ে চেম্বারের নেতৃত্বকে অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছেন।
সংবিধানবিরোধী তফসিল ঘোষণার অভিযোগ
ব্যবসায়ী নেতারা জানান, চেম্বারের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সদস্যপদ নবায়নের সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকার কথা। কিন্তু প্রশাসক আনোয়ার পাশা গত ১১ আগস্ট নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন এবং ১ সেপ্টেম্বর সদস্যপদ নবায়নের শেষ তারিখ বেঁধে দেন। এতে হাজার হাজার ব্যবসায়ী নবায়নের সুযোগ পাননি।
চেম্বারের ১৩ হাজার ৭০০ সদস্যের মধ্যে মাত্র ৬ হাজারের কিছু বেশি সদস্যপদ নবায়ন করতে পেরেছেন। ফলে প্রায় অর্ধেকের বেশি সদস্য ভোটাধিকার হারিয়েছেন। এ ছাড়া “অ্যাসোসিয়েট” ও “টাউন” গ্রুপে ভোটার করার ক্ষেত্রেও নানা অসঙ্গতি ও বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ব্যবসায়ীদের বক্তব্য
মানববন্ধনে মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী, আবু ফয়েজ খান, দিদারুল আলম চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন,“আমরা চাই ব্যবসায়ীদের মতামত ও ভোটের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত হোক। যারা দেশের উন্নয়ন ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কাজ করবেন তারাই যেন নেতৃত্বে আসতে পারেন। কিন্তু বর্তমান প্রশাসক তড়িঘড়ি করে নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করে ব্যবসায়ীদের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই অবিলম্বে তাকে অপসারণ করে নতুন প্রশাসকের অধীনে পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের পর নির্বাচন দিতে হবে।”
বিশ্লেষণ ও ভিন্ন দৃষ্টিকোণ
বিশ্লেষকদের মতে, চিটাগাংচেম্বার নিয়ে টানাপোড়েন কেবল নেতৃত্ব সংকট নয়, ব্যবসায়ী মহলের ভেতরে বিভাজনকেও সামনে এনেছে। সদস্যপদ নবায়নে অনিয়ম ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বৈষম্য ব্যবসায়ীদের আস্থাকে নষ্ট করছে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ না হলে শিল্প-বাণিজ্য খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
চট্টগ্রাম দেশের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র হওয়ায় চেম্বারের কার্যকর নেতৃত্ব শুধু ব্যবসায়ী সমাজ নয়, জাতীয় অর্থনীতিতেও সরাসরি প্রভাব ফেলে। তাই দ্রুত সমাধান না হলে এ অচলাবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
👉 আপনার মতে, চিটাগাং চেম্বারের সংকট নিরসনে সরকার ও ব্যবসায়ী মহল কী পদক্ষেপ নিতে পারে? মন্তব্যে আপনার মতামত জানান।










