Home সারাদেশ চর দখল নিয়ে রণক্ষেত্র হাতিয়া: নিহত ৫

চর দখল নিয়ে রণক্ষেত্র হাতিয়া: নিহত ৫

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, নোয়াখালী: দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীবেষ্টিত দুর্গম জাগলার চরে আধিপত্য বিস্তার ও খাস জমি দখলকে কেন্দ্র করে দুই সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত চলা এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুই বাহিনীর প্রধানসহ অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন—স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘আলাউদ্দিন বাহিনী’র প্রধান আলাউদ্দিন (৪৫), তার প্রতিদ্বন্দ্বী ‘সামছু বাহিনী’র প্রধান সামছুদ্দিন ওরফে কোপা সামছু (৫০), সামছুদ্দিনের ছেলে মোবারক হোসেন (২৪) এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুই ব্যক্তি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মেঘনা নদীতে নতুন জেগে ওঠা ‘জাগলার চর’ এবং এর সংলগ্ন মাছ ধরার ঘাটের দখল নিয়ে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে আলাউদ্দিন ও সামছুদ্দিনের গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। মঙ্গলবার ভোরে কুয়াশার সুযোগ নিয়ে আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র ক্যাডার চরের দখল নিতে হামলা চালায়। এ সময় সামছুদ্দিনের অনুসারীরা পাল্টা আক্রমণ করলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় কয়েকশ রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়েছে।

চরটি উপজেলা সদর থেকে অত্যন্ত দুর্গম এবং বিচ্ছিন্ন হওয়ায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। দুপুরে হাতিয়া থানা পুলিশ ও কোস্টগার্ডের একটি যৌথ দল স্পিডবোট যোগে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠিয়েছে; অন্য একজন হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম জানান, “দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছি। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেফতারে চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।”

এদিকে এই ঘটনার পর পুরো জাগলার চর ও পার্শ্ববর্তী সুখচর ইউনিয়নে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ চরাবাসী পুরুষরা গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আত্মগোপন করছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, চরাঞ্চলে এ ধরনের সশস্ত্র মহড়া ও দখলদারিত্ব বন্ধে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।