Home আন্তর্জাতিক মহাশূন্যে ছয় মাস কাটিয়ে ফিরলেন চীনা নভোচারীরা

মহাশূন্যে ছয় মাস কাটিয়ে ফিরলেন চীনা নভোচারীরা

ছবি সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: চীনের পরিচালিত মানব মহাকাশ অভিযান শেনচৌ-১৯ সফলভাবে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে চীনের উত্তরাঞ্চলীয় ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলের ডংফেং ল্যান্ডিং সাইটে ক্যাপসুলটি অবতরণ করে। এতে থাকা তিন নভোচারী নিরাপদে উদ্ধার হন।

চীনা মহাকাশ সংস্থা CMSA (China Manned Space Agency) নিশ্চিত করেছে, শেনচৌ-১৯ মিশনে অংশ নেওয়া নভোচারীরা চীনের নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তিয়ানগং-এ প্রায় ছয় মাস কাটিয়েছেন। এই সময় তারা বায়োলজিক্যাল গবেষণা, রোবোটিক রক্ষণাবেক্ষণ, মাইক্রোগ্র্যাভিটি প্রভাবমূলক পরীক্ষা সহ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন।

CMSA জানায়, নভোচারীদের স্বাস্থ্য ভালো রয়েছে এবং তাদের শারীরিক অবস্থা এখন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চি হাইঝু এই নিয়ে দ্বিতীয়বার মহাকাশে গিয়েছেন। এর আগে তিনি শেনচৌ-১৭ মিশনে সহকারী হিসেবে ছিলেন। লি ইয়াং ও তাং মিং প্রথমবারের মতো মহাকাশ ভ্রমণ করলেন, এবং তারা দুজনেই চীনের নতুন মহাকাশ প্রশিক্ষণ ব্যাচের সদস্য।

চীনের তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশন তিনটি প্রধান মডিউল নিয়ে গঠিত: তিয়ানহে (কেন্দ্রীয় মডিউল), ওয়েনটিয়ান (ল্যাব মডিউল) এবং মেনটিয়ান (অপর ল্যাব মডিউল)। স্টেশনটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের বিকল্প হিসেবে কাজ করছে এবং এটি সম্পূর্ণরূপে চীনের দ্বারা নির্মিত ও পরিচালিত।

শেনচৌ সিরিজের মিশনগুলো ২০০৩ সালে শেনচৌ-৫ দিয়ে শুরু হয়। এরপর একে একে ১৯টি মানববাহী মিশন পরিচালনা করে চীন, যার মধ্যে অধিকাংশই সফলভাবে বৈজ্ঞানিক কাজ সম্পন্ন করেছে। শেনচৌ-১৪ এবং ১৫ মিশনগুলো তিয়ানগং স্টেশনের নির্মাণ ও স্থিতিশীলতা পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

চীন ঘোষণা করেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে তারা চাঁদে মানব মিশন পাঠাবে। তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশন হবে সেই পরিকল্পনার অন্যতম ভিত্তি। এছাড়াও, চীন আন্তর্জাতিক গবেষক ও সংস্থাকে তিয়ানগং ব্যবহার করতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

বিশ্বজুড়ে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের শেনচৌ মিশনগুলো আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণায় নতুন এক ভারসাম্য এনে দিয়েছে।

রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ একাধিক দেশ চীনের এই সফল মিশনের প্রশংসা করেছে এবং ভবিষ্যতে যৌথ গবেষণার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য অনুযায়ী, “তিয়ানগং স্টেশন এবং শেনচৌ মিশনগুলো মহাকাশ গবেষণাকে শুধু চীনের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ রাখেনি, বরং বিশ্বমঞ্চে নতুন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়নের দরজা খুলে দিয়েছে।”

এই সফল প্রত্যাবর্তন চীনের জন্য যেমন গর্বের, তেমনি মানব সভ্যতার বিজ্ঞানযাত্রার জন্যও একটি বড় মাইলফলক।