বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত ঐতিহাসিক সমাবেশ আজ রাজধানীর শাহবাগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দুপুর আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই শাহবাগ এলাকায় নেতাকর্মীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। প্রস্তুত হয়েছে অস্থায়ী মঞ্চ। পুরো এলাকাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যমকর্মী ও সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে।
সমাবেশে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সরাসরি উপস্থিত থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলসহ শীর্ষ নেতারা।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ৯০টি সাংগঠনিক টিম গঠন করা হয়েছে। অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন জেলা ও মহানগর থেকে নেতা-কর্মীরা ইতোমধ্যে রাজধানীতে পৌঁছেছেন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আনার জন্য সংগঠনটি ২০ বগির বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে, যা আজ দুপুরে ঢাকায় পৌঁছাবে এবং সন্ধ্যায় ফিরে যাবে।
ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ জানান, গত বছরের ৩ আগস্ট দিনটি শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা আন্দোলনের সূচনার স্মারক হিসেবে চিহ্নিত। এদিনের স্মরণে তারা এবারকার সমাবেশকে গণজাগরণে পরিণত করতে চান। গত বুধবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক ভার্চুয়াল বৈঠকে ২৫৪ নেতার মধ্যে ৯০টি সাংগঠনিক টিম গঠন করেন এবং নানা দিকনির্দেশনা দেন।
সমাবেশ ঘিরে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ছয় দফা নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সমাবেশে কোনো ব্যানার, ফেস্টুন বা প্ল্যাকার্ড আনা যাবে না, ব্যক্তিগত শোডাউন ও মিছিল নিষিদ্ধ, ইউনিটভিত্তিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এবং সমাবেশস্থল পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যান চলাচলে যেন বিঘ্ন না ঘটে, সেজন্য জরুরি পরিবহনের জন্য পথ ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শাহবাগে জনসমাগমের কারণে নাগরিকদের দুর্ভোগের আশঙ্কায় আগাম দুঃখ প্রকাশ করেছে ছাত্রদল। এক বিবৃতিতে দলটির দফতর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমরা শহিদ মিনারে সমাবেশ করার অনুমতি নিয়েও উদারতাবশত স্থান পরিবর্তন করেছি। আশা করি, নগরবাসী বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করবেন।”
সমাবেশে ছাত্রসমাজের ভূমিকা, ভোটাধিকার আদায়, শিক্ষা খাত রক্ষা এবং তরুণদের কর্মসংস্থানের বার্তা তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা। একইসঙ্গে তারেক রহমানের বক্তব্যে থাকবে ফ্যাসিবাদবিরোধী শপথ এবং ছাত্রসমাজকে রাজনীতিতে গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান।
গতকাল রাত থেকেই সমাবেশস্থলে রাতযাপন করেছেন অনেক নেতা-কর্মী। ভোরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন আশপাশের ইউনিটের সদস্যরা। কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে কেউ ব্যানার-ফেস্টুন বহন করছেন না, বরং দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রেখে সমাবেশ সফল করার প্রস্তুতিতে নিয়োজিত রয়েছেন সবাই।