বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: রাজধানীর গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় পলাতক গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার (১ আগস্ট) ভোরে ওয়ারী এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্ত অপু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে সাবেক এমপির বাসায় গিয়ে চাঁদা দাবি করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে আগেই চাঁদাবাজির মামলা দায়ের হয়। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত ২৬ জুলাই সন্ধ্যায়। গুলশান ৮৩ নম্বর রোডে শাম্মী আহমেদের বাসায় যান কয়েকজন যুবক। নিজেদের ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়ে তারা সাবেক সংসদ সদস্যের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। এ সময় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। পরে তিনি গুলশান থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে আটক করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— ইব্রাহিম হোসেন ওরফে মুন্না (২৪), সাকাদাউন সিয়াম (২২), সাদমান সাদাব (২১) ও অপ্রাপ্তবয়স্ক এক কিশোর। এ ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদকেও গ্রেপ্তার করা হয়। রিমান্ডে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রিয়াদের বাসা থেকে চারটি চেক (মোট দুই কোটি ২৫ লাখ টাকার) ও নগদ দুই লাখ ৯৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্র গত এক বছর ধরে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে আসছিল।
চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর জানে আলম অপু একটি ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, তিনি গ্রেপ্তার হননি এবং এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে ভিডিওচিত্র ও সাক্ষ্যপ্রমাণে তার সম্পৃক্ততা উঠে আসার পর ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অভিযুক্তদের সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে। গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও সদস্যসচিব জাহিদ আহসান স্বাক্ষরিত এক নোটিশে জানানো হয়, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অপু ও রিয়াদকে সব পর্যায়ের দায়িত্ব ও সদস্যপদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলায় আরও ১০ থেকে ১২ জনের নাম উঠে এসেছে, যারা চাঁদাবাজি চক্রের সঙ্গে জড়িত। তাদের সবার বিরুদ্ধেই তদন্ত চলমান রয়েছে।