Home রাজনীতি ‘আল আকাবা’ সমবায় কেলেঙ্কারি: দোকান থেকে মাল সরাতে গিয়ে ধরা

‘আল আকাবা’ সমবায় কেলেঙ্কারি: দোকান থেকে মাল সরাতে গিয়ে ধরা

ছবি সংগৃহীত

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, জামালপুর: মাদারগঞ্জে আলোচিত ‘আল আকাবা’ সমবায় সমিতির দোকান থেকে গোপনে মালামাল সরানোর সময় স্থানীয় জনতার হাতে আটক হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর জামালপুর শহর শাখার আমীর মোকাদ্দেস হোসেন এবং তার এক সহযোগী। শনিবার (১৭ মে) দিবাগত রাতে উপজেলার বালিজুড়ি বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আটক দুজনকে গলায় জুতার মালা দিয়ে ঘুরানো হয়—এই ঘটনার ভিডিও এবং ছবি রাতারাতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ‘আল আকাবা’ সমবায় সমিতির নিচতলায় ‘ওয়ান এ’ নামে একটি রেডিমেড পোশাকের দোকান ছিল। সমিতির গ্রাহক রকিবুল ইসলাম আ. রহিম বলেন, “শনিবার গভীর রাতে হঠাৎ খবর পাই, দোকান থেকে কয়েক লাখ টাকার পোশাক গোপনে সরানো হচ্ছে। আমরা দ্রুত সেখানে যাই এবং দুইজনকে মালসহ আটক করি। পরে জানা যায়, তাদের একজন জামায়াতে ইসলামীর শহর আমীর মোকাদ্দেস হোসেন।”

তিনি আরও জানান, মোকাদ্দেস হোসেন দোকানে নিজের অংশীদারিত্ব দাবি করেন। তবে গ্রাহকদের সন্দেহ, এটি মূলত আত্মসাত করা সম্পদ গোপনে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা ছিল।

আরেক গ্রাহক আজাহারুল ইসলাম বলেন, “এই সমবায় সমিতির মাধ্যমে কয়েক হাজার গ্রাহক থেকে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা আমানত নেওয়া হয়েছিল। উচ্চ সুদের লোভ দেখিয়ে গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়। এক বছরের বেশি সময় ধরে অফিস বন্ধ, কর্মকর্তারা পলাতক। এখন দেখা যাচ্ছে, রাতের অন্ধকারে দোকানের মাল সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে।”

পরে স্থানীয় জনতা দুইজনকে বেঁধে রাখে এবং গলায় জুতার মালা দিয়ে এলাকায় ঘোরায়। পরে খবর পেয়ে মাদারগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের হেফাজতে নেয়।

মাদারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান আল মামুন জানান, “দুইজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঘটনার বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনায় বালিজুড়ি বাজারসহ পুরো এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। গ্রাহকরা দাবি করছেন, যারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে যদি প্রতারণার দায় এড়ানোর চেষ্টা হয়, তবে সেটি সমাজের জন্য আরও ভয়াবহ সংকেত।