Home বিশেষ প্রতিবেদন জুনের মধ্যে কাজ শেষ ফেনী নদীর মৈত্রীসেতুর: নব দ্বার খুলবে দুই...

জুনের মধ্যে কাজ শেষ ফেনী নদীর মৈত্রীসেতুর: নব দ্বার খুলবে দুই প্রান্তের অর্থনীতির

নিজাম উদ্দিন লাভলু, রামগড় : রামগড়-সাব্রুম স্থলবন্দর চালুর প্রতীক্ষায় প্রহর গুণছে দুই দেশের মানুষ। অন্যদিকে, ফেনী নদীর ওপর মৈত্রীসেতু-১ এর নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। ভারত সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণাধীন এ সেতুটির নির্মাণকাজ ২০২০ সালের জুনের মধ্যে  সম্পন্ন হওয়ার কথা। এটি নির্মাণ হওয়ার পরই বহু প্রতীক্ষিত রামগড় সাব্রুম স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালু হবে। বাংলাদেশের ১৫তম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রথম  এ স্থলবন্দর চালু হলে দুই দেশের ব্যবসা বাণিজ্য, পর্যটনসহ সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ভারত  দক্ষিণ এশিয়ার সাথে সেভেন সিস্টারখ্যাত তাদের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় ৭টি অনুন্নত রাজ্যের ‘গেটওয়ে’  হিসেবে দেখছে মৈত্রী সেতুটিকে।

প্রসংগত: ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরকালে ভারতের তৎকালীন  প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এর সাথে বৈঠকে রামগড়- সাব্রুম স্থলবন্দর চালুর যৌথ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফেনীনদীর ওপর নির্মাণাধীন  বাংলাদেশ ভারত মৈত্রী সেতু-১ নামে  সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন। রামগড়- সাব্রুম স্থল বন্দর চালুর লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী ফেনীনদীর ওপর মৈত্রী সেতু-১ নির্মাণ কাজের জন্য ২০১৭ সালের এপ্রিলে আগরওয়াল কনস্ট্রাকশন নামে গুজরাটের একটি প্রতিষ্ঠানকে ঠিকাদার নিযুক্ত করে ভারতের ন্যাশনাল হাইওয়েস এন্ড ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) সংস্থাটি । নির্মাণকাজের নিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৪ দশমিক ৮ মিটার  প্রস্থের দুই লেন বিশিষ্ট এক্সটা ডোজড, ক্যাবল স্টেইড আরসিসি মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে ২০১৭ সালের নভেম্বরে। রামগড় পৌর এলাকার মহামুনি এবং ভারতের সাব্রুমের নগর পঞ্চায়েতের  নবীনপাড়া এলাকায় সীমান্তবর্তী ফেনীনদীর ওপর দ্রুত গতিতে চলছে সেতুর নির্মাণ কাজ। বৃহষ্পতিবার(২৪ অক্টোবর) সরেজমিনে সেতু নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ভারত দুই অংশেই বিরামহীনভাবে  সেতুর কাজ করছেন ভারতীয় প্রকৌশলী ও শ্রমিকরা। নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত হায়দ্রা, স্কেভেটরসহ বিভিন্ন ভারী ভেহিক্যাল, মেশিনারিজ এবং নির্মাণ সামগ্রী এপারে আনতে নদীর ওপর  অস্থায়ী সেতু তৈরী করা হয়েছে। কর্তব্যরত ভারতীয় প্রকৌশলী মতিউর রহমান সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বলেন, ৬০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ আগামী বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, ৪১২ মিটার দীর্ঘ এ সেতুর মোট পিলার রয়েছে ১২টি। এগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ করা হয়েছে ৮ টি ও ভারতের অংশে ৪টি। স্প্যান রয়েছে ১১টি। তন্মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৩৩.৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে দুটি, ২৭.৫ মিটারের ৪টি ও ৫০ মিটারের একটি। নদীর ওপর ৮০ মিটারের একটি, ভারতের অংশে ৫০ মিটারের একটি ও ২৭.৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে দুটি স্প্যান রয়েছে। নদীর অংশের ৮০ মিটারের স্প্যান এবং নদীর দুই পাড়ের ৫০ মিটারের দুটিসহ মোট  ১৮০মিটার দৈর্ঘ্যরে  এ তিনটি স্প্যানই হচ্ছে মেইন স্প্যান। প্রকৌশলী মতিউর আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ অংশে ৬টি , ভারতের অংশে  দুটি এবং ৩টি মেইন স্টীল গার্ডার স্প্যানের কাজ চলছে। দৈনিক  প্রায় ১৫০ জন শ্রমিক সেতুর নির্মাণ কাজ করছে। প্রজেক্ট ম্যানেজারসহ ১১জন প্রকৌশলী এখানে নিয়োজিত আছে। তিনি জানান, সেতুর  তিনটি মেইন স্প্যানের ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্যরে অংশটি স্টেইড ক্যাবলে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকবে। এ অংশের দুটি পিলারের ওপরে সেতুর ছাদে ৪টি আরসিসি পাইলন নির্মাণ করা হবে। এ পাইলনে লোহার স্টেইড ক্যাবলের মাধ্যমে সেতুর এ অংশটি ঝুলন্ত থাকবে। নদীর তলদেশ থেকে এ অংশটির উচ্চতা হবে প্রায় ১৭ মিটার। সেতু থেকে ২৪০ মিটার এপ্রোচ রোড নির্মাণ করে রামগড়- চট্টগ্রাম প্রধান সড়কে সাথে এবং ওপারে সেতু থেকে প্রায় ১২শ মিটার এপ্রোচ রাস্তা নবীনপাড়া- ঠাকুরপল্লী হয়ে সাব্রুম- আগরতলা জাতীয় সড়কে যুক্ত হবে। জানাযায়, প্রায় ১০০ কোটি ভারতীয় রুপি ব্যয় করে সেতুটি নির্মাণ করছে ভারতের কেন্দ্রিয় সরকার। আর্ন্তজাতিক মানের  দুই লেনের এ সেতুতে থাকবে ফুটওয়েও । দীর্ঘ স্থায়ীত্বের এ সেতুটির ডিজাইনও আকর্ষনীয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জানাযায়, অনুন্নত সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অতি দূরত্বের কারণে সেভেন সিস্টার নামে পরিচিত ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় ৭টি রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই সেদেশের সরকার রামগড়-সাব্রুম স্থলবন্দর ও ফেনীনদীর ওপর সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। রামগড় থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরের চট্টগ্রাম বন্দরকে টার্গেট করেই তাদের এ পরিকল্পনা । ২০০২ সালের ১৮ এপ্রিল ভারতের  মিনিস্ট্রি অব এক্সানাল এ্যাফেয়ার্স বিভাগ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ফেনীনদীর ওপর  ১১০মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের একটি প্রস্তাব দেয়া হয়। নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে প্রেরীত ভারত  সরকারের এ পত্রের মেমো নং ও/রর/২০২/৩/২০০০ । ঐ বছরের ২৪ আগষ্ট খাগড়াছড়ির তৎকালীন এমপি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ ভুইয়া  রামগড়ে ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশান চালু এবং ফেনীনদীর ওপর সেতু নির্মাণের ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে একটি ডিও লেটার দেন। কিন্তু বিএনপি সরকার আমলে তাঁর এ উদ্যোগ ভেস্তে যায়। ২০০৯ সালের ১৭ জুন ঢাকায় নিযুক্ত তৎকালীন ভারতের ডেপুটি হাই কমিশনার শ্রীমতি মুক্তা দত্ত রামগড়ের মহামুনিতে প্রস্তাবিত স্থলবন্দর ও ফেনীনদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেন। ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে নয়াদিল্লীতে ঘোষিত বাংলাদেশ ভারতের যৌথ ইশতেহারের ৩৫ নম্বর অনুচ্ছেদে খাগড়াছড়ির রামগড় ও দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুমে স্থলবন্দর চালু করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। ঐ বছরের মে মাসে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের তিন সদস্যের একটি কমিটি সরজমিনে এসে রামগড়ে স্থলবন্দর স্থাপনের  জন্য মহামুনির বর্তমান স্থানটি নির্ধারণ করেন। পরবর্তীতে  ২০১১ সালের জানুয়ারী শুরুতে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের একটি যৌথ প্রতিনিধিদল, ২০১২ সালের জুন মাসে  বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার পঙ্কজ শরণ,  ২৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন  নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহাজাহান খান , ২০১৩’র  আগষ্টে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের (চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) তৎকালীন সহকারি হাই কমিশনার সোমনাথ ঘোষ, ২০১৪’র ডিসেম্বরে  চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার সোমনাথ হালদার রামগড় স্থলবন্দরের স্থান এবং ফেনী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেন । ২০১৭ সালের নভেম্বরে সেতুর কাজ শুরুর আগে এভাবে দফায় দফায় স্থলবন্দর  সেতু নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করেন দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারী  সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও  বাংলাদেশে নিযুক্ত তৎকালীন ভারতের হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা  মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। সর্বশেষ গত ১৫ জুন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার রিভা  গাঙ্গুলি দাশ রামগড়- সাব্রুম স্থল বন্দরের স্থান ও ফেনী নদীর ওপর নির্মাণাধীন মৈত্রী সেতু-১ পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখানে স্থলবন্দর চালু হলে বাংলাদেশ-ভারত দুদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার ঘটবে। মৈত্রী সেতু সেতুিট দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।

২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল মৈত্রী সেতুর সাব্রুম অংশে নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে সেখানকার সংবাদ মাধ্যমকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলেন, ফেনী নদীর উপর নির্মাণাধীন ফেনী ব্রীজ হবে ভারত বাংলাদেশ দুদেশের বাণিজ্যিক সেতুবন্ধন। ত্রিপুরা পাবে ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দর। এ  বন্দর ব্যবহার করে ত্রিপুরাতে অর্ধেক খরচে পৌঁছে যাবে প্রয়োজনীয় সব সামগ্রী। ফেনী ব্রীজই দুদেশের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যের সেতুবন্ধন রচনা করবে। ফেনী ব্রিজ হলে  ত্রিপুরার বিরাট সমস্যার সমাধান হবে। এ ব্রিজ হয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রী, রড, সিমেন্ট, ইটসহ প্রয়োজনীয় সব ধরণের সামগ্রী অল্প সময়ে ও স্বল্প খরচে ত্রিপুরায় পৌঁছে যাবে। জলপথ ব্যবহারের সুযোগের কারণে পণ্য পরিবহণ ব্যয় অর্ধেকে নেমে আসবে। ভারতের অন্যান্য বাজার বা শহর থেকে ত্রিপুরায় উন্নয়ন সামগ্রীর দাম অনেক কমে পাওয়া যাবে। ব্যবসা বাণিজ্য এখানে প্রসার ঘটলে বাংলাদেশেও লাভবান হবে। ত্রিপুরার উন্নয়নে এখানবাসীর দীর্ঘদিনের যে স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন পুরণ করবে ফেনী ব্রিজ। মূখ্যমন্ত্রী আরও বলেন,  দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সাথে ত্রিপুরাসহ সাতটি রাজ্যের  সংযুক্তির ‘গেটওয়ে’ হিসেবে ব্যবহার হবে ফেনী ব্রিজ।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমও মৈত্রী সেতু নির্মাণের ফলে তাদের  অনুন্নত রাজ্যগুলোর সার্বিক উন্নয়নের আশাব্যঞ্জক সংবাদ প্রকাশ করছে নিয়মিত। আগরতলার ডেইলী দেশের কথা পত্রিকায় প্রকাশিত এক খবরে বলা  হয়, ফেনীনদীর ওপর এই আর্ন্তজাতিক সেতু নির্মিত হলে শুধু ভারতের পূর্বোত্তরই নয়, খুলে  যাবে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে বাণিজ্যিক  সম্ভাবনা।  সেতুটি হলে  বাংলাদেশের সঙ্গে সড়কপথে ত্রিপুরাসহ উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোর বাণিজ্যিক আদানপ্রদানের সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কাছে এসে যাবে চট্টগ্রাম নৌ বন্দর। সমুদ্র পথে পণ্য পরিবহণের সুযোগও মিলবে।

এদিকে, গত ১৬ অক্টোবর স্বরাস্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি রামগড়ে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে বলেছেন, রামগড় স্থলবন্দর ও মৈত্রী সেতু চালু হলে গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। এটি ব্যবসা বাণিজ্যের  নতুন দ্বার উন্মোচিত করবে।

উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার সাথে বাণিজ্য প্রসারে চট্টগ্রাম ও ত্রিপুরার ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন থেকে রামগড় সাব্রুম সীমান্তে স্থলবন্দর চালুর দাবি জানিয়ে আসছে। দুদেশের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, রামগড় স্থলবন্দর চালু হলে বাংলাদেশ থেকে প্রসাধন সামগ্রী,সিরামিক ও মেলামাইল পণ্য, সিমেন্ট ,ইট, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, তামাক জাতীয় পণ্য, শুটকি মাছ প্রভৃতি ত্রিপুরা রাজ্যে রপ্তানীর সুযোগ রয়েছে। অন্যদিকে, ত্রিপুরা থেকে কাঠ, বাঁশ,পাথর, মশলা প্রভৃতি পণ্য আমদানী করা যাবে। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মালামাল ও ভারী মেশিনারিজ সামগ্রী রামগড় স্থল বন্দর হয়ে এ সেতু দিয়ে ত্রিপুরাসহ উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে নিয়ে যাবে ভারত। ব্যবসা বাণিজ্য ছাড়াও  উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটেতেও  মৈত্রী সেতুটি কাজে লাগাবে তারা ।

 সীমান্তের ওপারের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানাগেছে, মৈত্রীসেতু নির্মাণের সমানতালে সেখানকার অভ্যন্তরিন মহাসড়কের উন্নয়নসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর উন্নয়ন কাজও চলছে জোরেশোরে। গত ৩ অক্টোবর সাব্রুম থেকে আগরতলা রেল সার্ভিস চালু করা হয়েছে। সাব্রুমে স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তুলতে বিপুল পরিমান জমিও অধিগ্রহণ করেছে । রামগড় সাব্রুম স্থলবন্দর ও মৈত্রী সেতুকে সামনে রেখে ত্রিপুরাসহ সেখানকার রাজ্যগুলোর যোগাযোগসহ ব্যবসা বাণিজ্যের নানামুখি উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে।

এদিকে,  সীমান্তের ওপারে উন্নয়ন যজ্ঞ চলছেও বাংলাদেশ অংশে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। মৈত্রী সেতু, এপ্রোচ রোড, কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, বিজিবি ও পুলিশ চেক পোস্ট ইত্যাদি নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম ছাড়া আর কিছু হয়নি। স্থলবন্দরের  এখনও কোন অবকাঠামোর কাজ শুরু হয়নি। তবে  রামগড় সাব্রুম স্থলবন্দরের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের সংযোগ সড়ক হিসেবে ঢাকা চট্টগ্রাম মহা সড়কের বারৈয়ারহাট হতে রামগড় পর্যন্ত সড়কটি চার লেনে রুপান্তরিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে জাইকা কাজটি করবে। ইতিমধ্যে সড়কে অবস্থিত বেশ কয়েকটি  ব্রিজ ও কালভার্ট পুন:নির্মাণের কাজ করেছে জাইকা । চট্টগ্রামের নাজিরহাট হতে রামগড় স্থলবন্দর পর্যন্ত রেল লাইন স্থাপনের পরিকল্পনার কথাও  জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।