Home Third Lead তেল মজুদের ঘাটতি ও মধ্যপ্রাচ্যের উদ্বেগে আবার চাঙা বিশ্ববাজার

তেল মজুদের ঘাটতি ও মধ্যপ্রাচ্যের উদ্বেগে আবার চাঙা বিশ্ববাজার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য আবার ঊর্ধ্বমুখী। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মজুদের বড় ধরনের ঘাটতি ও চাহিদার ঊর্ধ্বগতি এই মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। একইসঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে চলমান উদ্বেগও বিনিয়োগকারীদের মনোভাবকে প্রভাবিত করছে।

টোকিও সময় বৃহস্পতিবার ভোরে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৫ সেন্ট বা ০ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭ দশমিক ৮৩ ডলার। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুড তেলের দাম ২০ সেন্ট বা ০ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে হয় ৬৫ দশমিক ১২ ডলার।

পূর্বের এক শতাংশ মূল্যহ্রাস কাটিয়ে এই দুটি বেঞ্চমার্কই বুধবার প্রায় এক শতাংশ হারে বাড়ে, কারণ হিসেবে উঠে আসে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি চাহিদা পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত।

নোমুরা সিকিউরিটিজের অর্থনীতিবিদ ইউকি তাকাশিমা জানান, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রের সাপ্তাহিক পরিসংখ্যানে মজুদ হ্রাসের যে চিত্র উঠে এসেছে, তা চাহিদার দৃঢ়তা প্রকাশ করে, ফলে কিছু ক্রেতা আবার বাজারে সক্রিয় হয়েছেন।’’

তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রকৃত অবস্থা নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে। সবার দৃষ্টি এখন ওপেক প্লাস জোটের সম্ভাব্য উৎপাদন নীতির দিকে।’’

ওপেক প্লাস জোটের সদস্য রাশিয়ার বৃহত্তম তেলপ্রতিষ্ঠান রোজনেফটের প্রধান ইগর সেইচিন জানিয়েছেন, জোটটি পূর্ব পরিকল্পনার তুলনায় এক বছর আগেই তেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমায় বাজার আবার মৌলিক বিষয়ের দিকে নজর দিচ্ছে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রীষ্মকালীন ড্রাইভিং সিজন পুরো দমে শুরু হয়েছে, যা পেট্রোল চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করছে।

এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (ইআইএ) তথ্য অনুযায়ী, জুনের তৃতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত তেলের মজুদ ৫ দশমিক ৮ মিলিয়ন ব্যারেল হ্রাস পায়, যা বিশ্লেষকদের ৭ লাখ ৯৭ হাজার ব্যারেলের প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি। একইসঙ্গে গ্যাসোলিনের মজুদও ২ দশমিক ১ মিলিয়ন ব্যারেল কমে গেছে, যা চাহিদার পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত বহন করে।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আগামী সপ্তাহে তেহরানের সঙ্গে আলোচনায় পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে অঙ্গীকার নেওয়ার বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করা হবে। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরানের তেল রপ্তানি নিয়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগে কিছুটা নমনীয়তা দেখানো হতে পারে দেশটির অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়তার লক্ষ্যে।