Home আন্তর্জাতিক ইরানের গ্যাসক্ষেত্রে হামলা: জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা

ইরানের গ্যাসক্ষেত্রে হামলা: জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার এক নতুন মোড় স্পষ্ট হলো ইরানের জ্বালানি খাতে সরাসরি আঘাতের মাধ্যমে। ইসরায়েল একটি বড় ধরনের হামলা চালায় ইরানের দক্ষিণ পারস গ্যাসক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়াকরণ স্থাপনায়।

আধা-সরকারি তাসনিম বার্তা সংস্থা জানায়, হামলার লক্ষ্য ছিল ‘ফেজ ১৪’ প্রক্রিয়াকরণ প্ল্যান্ট। হামলার পর সেখানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যার জেরে একটি উৎপাদন প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে যায়।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র এখন হামলার নিশানায়

পারসিক উপসাগরে অবস্থিত দক্ষিণ পারস গ্যাসক্ষেত্র বিশ্বের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্র, যেটি ইরান ও কাতারের মধ্যে ভাগ করা। এই গ্যাস ইরান মূলত দেশীয় চাহিদা পূরণে ব্যবহার করে থাকে।

 ফেজ ১৪-তে হামলা ও এর ফলে উৎপাদন স্থগিত হওয়ায় ইরানের অভ্যন্তরীণ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহে বড়সড় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। চলমান বিদ্যুৎ সংকটের মধ্যে এমন হামলা ইরানের অর্থনীতিকে আরও দুর্বল করে তুলবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

অর্থনীতিতে দৈনিক ক্ষতি প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার

ইরান চেম্বার অব কমার্স জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বিদ্যুৎ বিভ্রাটে দেশটি প্রতিদিন প্রায় ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে। ব্যবসা, কলকারখানা ও সাধারণ জনগণের দৈনন্দিন জীবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

জ্বালানি বাজারে চরম অস্থিরতা

শুক্রবার থেকেই তেলের বাজারে উত্তেজনা লক্ষ করা গেছে। মার্কিন অপরিশোধিত তেলের দাম এক লাফে ১৪ শতাংশ বেড়ে ৭৩ ডলারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।

বিশ্লেষক রিচার্ড ব্রোঞ্জ বলেন, “এটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আমরা একটি ক্রমবর্ধমান সংঘাতের ঘূর্ণিতে প্রবেশ করেছি।” তিনি সতর্ক করে জানান, ইসরায়েল সম্ভবত আরও ইরানি জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলা চালাতে পারে।

ফাজর জাম প্ল্যান্টেও আগুন

একই দিনে আরেকটি ঘটনা ঘটে ইরানের ফাজর জাম গ্যাসপ্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে, যেখানে ভয়াবহ আগুন লাগে। এই প্ল্যান্টটি দক্ষিণ পারস ছাড়াও নার ও কঙ্গান গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ করে থাকে। তাসনিম এটিকে দেশের অন্যতম বৃহৎ গ্যাস স্থাপনা হিসেবে বর্ণনা করেছে।

তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়ানোর আশঙ্কা

বিশ্ববিখ্যাত বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস সতর্ক করেছে, যদি সংঘাত আরও তীব্র হয়, তবে অপরিশোধিত তেলের দাম ১০০ ডলারের উপরে চলে যেতে পারে। যদিও তারা বছরের শেষ নাগাদ দাম ৬০ ডলারের নিচে নেমে আসবে বলেই পূর্বাভাস দিয়েছে।

বিশ্লেষক ডান স্ট্রুইভেন বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে আমাদের পূর্বাভাসে সংক্ষিপ্তমেয়াদি ঝুঁকিগুলো এখন স্পষ্টভাবেই ঊর্ধ্বমুখী।”A plume of heavy smoke and fire rise over an oil refinery in southern Tehran