অজ্ঞাত আরও এক নারীকে খুঁজছে পুলিশ
বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহ: দৈনিক জবাবদিহির ঝিনাইদহ প্রতিনিধি আবু সেলিম মিয়ার মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনায় নাকি তাকে হত্যা করা হযেছে তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ত্বালাকপ্রাপ্তা দুই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং অজ্ঞাত এক নারীকে খুঁজছে পুলিশ।
নিহত সেলিম মিয়া জিনাইদহ প্রেসক্লাবের সদস্য। সদর উপজেলার হলিধানী গ্রামে তার বাড়ি। তিনি পরিবহন ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন থাকার কথা, কিন্তু সেলিমের শরীরে মাথার পেছনে গভীর আঘাত ব্যতীত আর কোনো ক্ষত চিহ্ন নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত সেলিমের মেয়ের জামাতা ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, বগুড়া থেকে ফিরে এসে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে আলফালাহ হাসপাতাল এলাকায় গিয়েছিলেন তার শ্বশুর। কাজ শেষে করে ফেরার পথে রাস্তায় তাকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে কে বা কারা। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক রাত ২ টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতেরর স্ত্রী মমতা বেগম জানান, তার স্বামীকে হত্যা করা হতে পারে। তিনি সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত ঘাতকদের চিহ্নিত করার দাবি জানান।
ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান বলেন, প্রাথমিক ভাবে এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তি ও আশপাশের সিসি ক্যামেরা যাচাই করে হত্যার রহস্য উন্মোচন করা হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সেলিম মিয়া ঝিনাইদহ শহরের হামদহ আলফালাহ হাসপাতালের সামনে এক নারীর সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তার মাথায় আঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এরপর থেকে আবু সেলিম মিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে প্রচার করা হয়।
এদিকে এ ঘটনার পর দুই নারীকে আটক করেছে পুলিশ। আটক দুই জন হলেন মেরিনা খাতুন ও রিপা কর্মকার। মেরিনা খাতুন মাগুরার শালিখা উপজেলার সামিয়ারপাড়া গ্রামের মন্টু মন্ডলের মেয়ে। রিপা কর্মকার ঝিনাইদহ সদরের কাতলামারী গ্রামের রবি কর্মকারের মেয়ে। এই দুইজনই তালাকপ্রাপ্তা।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবারে ওই দুই যুবতী নিজেদের ভিন্ন ভিন্ন ঠিকানার পরিচয় দেন। এদিকে এ ঘটনায় আরো এক নারীকে খুঁজছে পুলিশ। অজ্ঞাত পরিচয় ওই নারী সেলিমের দুর্ঘটনার খবরটি মেরিনা ও রিপাকে প্রথম ফোন করে জানায়।
সেলিমের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত মেরিনা ও রিপার গতিবিধি নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলে তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়। প্রথমে তারা নিজেদের ভুল ঠিকানায় পরিচয় দেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান, তারা সেলিমের হামদহ এলাকার ফ্লাটে পাশাপাশি বসবাস করতেন এবং অজ্ঞাত এক নারীর ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অজ্ঞান ও মুমুর্ষ অবস্থায় সেলিমকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ব্যবসায়িক শত্রুতা অথবা নারীঘটিত কারণে সেলিম মিয়াকে হত্যা করা হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।










