Home কক্সবাজার ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি রেল সংযোগে বড় অগ্রগতি

ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি রেল সংযোগে বড় অগ্রগতি

এডিবি দিচ্ছে ৮২৮০ কোটি টাকা

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: ঢাকা থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের রেল যোগাযোগকে নিরবচ্ছিন্ন ও দ্রুততর করতে বড় ধরনের অবকাঠামোগত উন্নয়নে নামছে সরকার। চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার মিটার গেজ রেলপথকে ডুয়েল গেজে রূপান্তর করতে ৬৯ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ হাজার ২৮০ কোটি টাকা) ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার করিডোরে এমন একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা হচ্ছে, যার ফলে ট্রেনকে আর চট্টগ্রাম স্টেশনে থামতে বা ইঞ্জিন ঘুরাতে হবে না। এতে যাতায়াতের সময় কমবে কয়েক ঘণ্টা।

সোমবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিওং নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। ইআরডি ও এডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঋণ ৫ বছরের রেয়াতকালসহ মোট ২৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় আড়াই কিলোমিটারের একটি বিশেষ বাইপাস সড়ক ও রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এটিই মূলত ঢাকা থেকে আসা ট্রেনগুলোকে সরাসরি কক্সবাজারে যাওয়ার সুযোগ করে দেবে। বর্তমানে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনগুলোকে চট্টগ্রাম স্টেশনে ঢুকে আবার উল্টো পথে বের হয়ে কক্সবাজার যেতে হয়, যা অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সেই জটিলতা আর থাকবে না।

‘চট্টগ্রাম-দোহাজারী মিটার গেজ রেলপথকে ডুয়েল গেজ রেলপথে রূপান্তর’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় শুধু লাইন পরিবর্তনই নয়, বরং ট্রেনের সক্ষমতা বাড়াতে আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে:

নতুন লোকোমোটিভ: রেলের বহরে যুক্ত হবে ৩০টি অত্যাধুনিক লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন)।

গতিসীমা বৃদ্ধি: পুরোনো লোকোমোটিভ মেরামত ও ট্র্যাক উন্নয়নের মাধ্যমে এই লাইনে ট্রেনের গতিসীমা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হবে।

পণ্য পরিবহন: বর্তমানে দেশের রেলপথে মোট পণ্য পরিবহনের ৫৫ শতাংশই এই করিডোর দিয়ে হয়। ডুয়েল গেজ হলে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের সক্ষমতা আরও বাড়বে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিওং বলেন, “এই প্রকল্পটি ঢাকা ও কক্সবাজারের মধ্যে রেল যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। এটি কেবল যাতায়াত সহজ করবে না, বরং পর্যটন এবং মৎস্য শিল্পে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রান্স-এশিয়া রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশ হিসেবে এই করিডোরটি আঞ্চলিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। এটি দেশের মোট যাত্রী পরিবহনের ৩২ শতাংশের যাতায়াতকে আরও আরামদায়ক ও দ্রুত করবে।