বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাস জীবনের ইতি টেনে অবশেষে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫শে ডিসেম্বর তিনি ঢাকার মাটিতে পা রাখবেন বলে দলীয় সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
দলটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, এই প্রত্যাবর্তন কেবল একজন নেতার ফিরে আসা নয়, বরং এটি বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এক স্মরণীয় ঘটনা হতে যাচ্ছে। বিমানবন্দর থেকে শুরু করে রাজপথ, সেদিন ঢাকার বুকে নামবে আবালবৃদ্ধবনিতার ঢল।
আনুষ্ঠানিক কমিটি নেই, তবু প্রস্তুত জনস্রোত
তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে দল থেকে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা কমিটি গঠন করা হয়নি। তবে নেতাদের মতে, এর কোনো প্রয়োজনও নেই। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “১৭ বছর পর আমাদের নেতা ফিরে আসছেন, এটি আমাদের জন্য বিশাল অনুপ্রেরণা। ২৫ তারিখে তাকে যে সংবর্ধনা জানানো হবে, তা অতীতে কোনো নেতা বাংলাদেশে পাননি। আমরা সবাই প্রস্তুত।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে নেতাকর্মীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। তৃণমূলের কর্মীরা বলছেন, কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষা নেই, প্রিয় নেতাকে বরণ করতে সেদিন স্বতঃস্ফূর্তভাবেই রাজপথে নামবে লাখো মানুষ।
নির্বাচনী আচরণবিধি ও বিতর্ক
সামনেই সংসদ নির্বাচন। দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের প্রধানের এমন বিশাল শোডাউন নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। তাদের ভাষ্যমতে, তারেক রহমান সেদিন নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে আসছেন না, তিনি দীর্ঘ নির্বাসন শেষে স্বদেশে ফিরছেন। তাকে স্বাগত জানানোটা আবেগের বহিঃপ্রকাশ, এতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো সুযোগ নেই।
কোথায় উঠবেন তারেক রহমান?
দেশে ফেরার পর তারেক রহমান কোথায় অবস্থান করবেন, তা নিয়ে চলছে জোর প্রস্তুতি। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, গুলশান-২ এর এভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে তিনি উঠতে পারেন। সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার বাড়িটির নামজারি সম্পন্ন করে কাগজপত্র বেগম খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দিয়েছে। বাড়িটি বসবাসের উপযোগী করতে চলছে ধোয়ামোছা ও নিরাপত্তার কাজ। এছাড়া ধানমন্ডির ৫ নম্বর সড়কে তার শ্বশুর, সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়াল এডমিরাল মাহবুব আলী খানের বাসভবন ‘মাহবুব ভবন’-এ ওঠার সম্ভাবনা নিয়েও দলের ভেতরে আলোচনা রয়েছে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার
তারেক রহমানের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে বিএনপি। চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী সিএসএফ তার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। এছাড়া নির্বাচনী প্রচারণা ও সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে দুটি বুলেটপ্রুফ গাড়ি কেনার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে দলটি।
সব মিলিয়ে, ২৫শে ডিসেম্বর ঘিরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন সাজ সাজ রব। দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে নেতার এই ফেরা রাজনীতিতে নতুন কোন মেরুকরণ তৈরি করে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
👉 জনমত জানান!
দীর্ঘ ১৭ বছর পর তারেক রহমানের এই দেশে ফেরার বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন? এটি কি আগামী নির্বাচনে বড় কোনো প্রভাব ফেলবে?
আপনার মূল্যবান মতামত আমাদের কমেন্ট করে জানান। রাজনৈতিক সব খবরাখবর সবার আগে পেতে প্রতিবেদনটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন।










