Home কলকাতা এক মাসে দুই প্রেমিকের সঙ্গে নাবালিকা

এক মাসে দুই প্রেমিকের সঙ্গে নাবালিকা

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: “প্রেমিকের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখব না।” এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেই নাবালিকা, যাকে গত মাসে উদ্ধার করে প্রশাসন বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে তার ঠাকুমার হাতে তুলে দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। সপ্তাহখানেক আগে সেই ১৫ বছর বয়সী নাবালিকা আবার নিখোঁজ হয়ে গেলে তার ঠাকুমার চিন্তায় পড়ে যাওয়া স্বাভাবিকই।  এ ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাটের।

সোমবার স্থানীয় পুলিশ এবং চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির যৌথ অভিযানে ওই নাবালিকাকে আবার উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রথমবার উদ্ধার হওয়ার পরও নাবালিকা তার পুরনো প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগ না রেখে, নতুন একটি প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। ফলে, মাত্র এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর ঘটনা ঘটলো।

শিশু কল্যাণ কমিটির নজরদারিতে থাকা ওই নাবালিকার এমন কীর্তি দেখে স্থানীয় প্রশাসনও হতবাক। কমিটির কর্মকর্তা রিতা দেব বলেন, “এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। একটি নাবালিকা যে তার নিজের নিরাপত্তা ও পরিবারের কথা না ভেবে এমন কাজ করতে পারে, এটি সমাজের জন্য সতর্কবার্তা।”

স্থানীয় বাসিন্দারা এ ঘটনাকে চাঞ্চল্যকর বলে মন্তব্য করেছেন। এক প্রতিবেশী বলেন, “এমন ঘটনা আগে কখনও শুনিনি। নাবালিকা হওয়ায় তার মনে হয় কিছু ভাবনার অভাব ছিল। কিন্তু এটি আমাদের সকলের জন্য চিন্তার বিষয়।”
অন্য এক স্থানীয় জানান, “প্রথমবার ফিরে আসার পরও সে পালিয়ে গেছে, এটি প্রমাণ করে যে শুধু কাউন্সেলিং দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হবে না। পারিবারিক ও মানসিক সমর্থন অত্যন্ত জরুরি।”

মালদা জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, “দুইবার নিখোঁজ হওয়ার পর আমরা নিশ্চিত করেছি যে নাবালিকাকে নিরাপদ স্থানে রাখা হচ্ছে। তাকে মালদার একটি মহিলা হোমে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখানে তার মানসিক ও শিক্ষাগত সহায়তা দেওয়া হবে।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রেম, সামাজিক চাপ ও মানসিক উত্তেজনা সম্পর্কিত সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. অমল চক্রবর্তী বলেন, “এমন ক্ষেত্রে কেবল পুলিশি হস্তক্ষেপ যথেষ্ট নয়। নাবালিকাদের মানসিক ও সামাজিক সহায়তা, পর্যাপ্ত পরামর্শ ও পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের সমন্বয় অপরিহার্য। প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায় থেকেই সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো দরকার।”

প্রশাসন ও শিশু কল্যাণ কমিটি দুটি বার্তাই দিয়েছে—এক, পরিবার ও সমাজের প্রতি কিশোর-কিশোরীদের মনোযোগী হওয়া, দুই, সন্তানদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে গুরুত্ব দেওয়া। জেলা পুলিশ জানিয়েছে, এই নাবালিকাকে আরও নিরাপদ পরিবেশে রাখা হবে এবং তার পুনর্বাসনের প্রক্রিয়ায় মনোযোগ দেওয়া হবে।

এভাবে, বালুরঘাটে এক মাসের ব্যবধানে এক নাবালিকার দুই প্রেমিকের সঙ্গে পালানোর ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি কেবল একটি ব্যক্তিগত ঘটনা নয়, বরং কিশোরদের মানসিক ও সামাজিক সমস্যার একটি দৃষ্টান্ত।