বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, খুলনাঃ সম্পর্কের বাঁধন যখন গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়ায়, তখন বিচ্ছেদই হয়ে ওঠে একমাত্র মুক্তির পথ। দীর্ঘ এক যুগের দহন, অবিশ্বাস আর গ্লানি ধুয়ে ফেলতে তাই দুধ দিয়ে গোসল করলেন খুলনার পাইকগাছার যুবক প্রবীর সরদার। সোমবার সকালে পাইকগাছা পৌরসভা কেন্দ্রীয় মন্দিরের চত্বরে এই দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়িয়েছেন পথচারীরা; সাক্ষী হয়েছেন এক করুণ অথচ মুক্তিকামী অধ্যায়ের।
সংসার মানেই বিশ্বাস আর ভালোবাসার এক যৌথ খামার। কিন্তু প্রবীরের দাবি, সেই খামারে গত ১২ বছর ধরে কেবলই জন্মেছে সন্দেহের আগাছা আর পরকীয়ার বিষবৃক্ষ। স্ত্রীর ধারাবাহিক সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড আর পরকীয়ার জেরে তাঁর জীবন হয়ে উঠেছিল দুর্বিষহ। এতদিন দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করেছেন সব, শুধুই সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে। কিন্তু ধৈর্যের বাঁধ যখন ভেঙে যায়, তখন মানুষ আর পিছু ফিরে তাকায় না।
দুধ দিয়ে নিজেকে পবিত্র করার পর ভেজা চোখে প্রবীর বললেন, “ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সবকিছু সহ্য করেছি দিনের পর দিন। চেয়েছিলাম সংসারটা টিকে থাকুক। কিন্তু আজ আমি শুধু একটু শান্তিতে থাকতে চাই। তাই দুধ দিয়ে গোসল করে, সব গ্লানি মুছে নতুন করে জীবন শুরু করতে চাই।”
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক প্রবীণ সমাজপতি আক্ষেপের সুরে বলেন, “ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে স্ত্রীর শত অপরাধও মুখ বুজে সহ্য করেছে প্রবীর। আজ ওকে দুধ দিয়ে গোসল করতে দেখে মনে হলো, ও শুধু একটি সম্পর্ক থেকেই বের হলো না, বরং অপমান আর যন্ত্রণার এক দীর্ঘ আগুন থেকে নিজেকে মুক্তি দিল।”
প্রতিবেশীদের কথায়ও উঠে এল দীর্ঘশ্বাসের সুর। আরেক প্রতিবেশী বলেন, “প্রবীরের স্ত্রীর আচরণে সমস্যা ছিল বহুদিনের। প্রবীর সবসময় চেয়েছে ভাঙা ঘর জোড়া লাগাতে। কিন্তু একা মানুষ আর কতটুকু লড়বে? এক হাতে তো তালি বাজে না।”
দুধের শুভ্রতায় নিজেকে শুদ্ধ করে প্রবীর সরদার যখন মন্দিরের চত্বর ত্যাগ করছিলেন, তখন তাঁর চোখেমুখে ছিল ক্লান্তির ছায়া, কিন্তু পদক্ষেপে ছিল এক ধরনের অদ্ভুত স্বস্তি—যেন দীর্ঘ কোনো দুঃস্বপ্ন শেষে ভোরের আলোর দেখা পেলেন তিনি।
লাইক দিন 👍, শেয়ার করুন 🔁, এবং মন্তব্যে জানান আপনার মতামত!










