Home Second Lead ধর্মের অপব্যাখ্যা করে বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না: ধর্ম উপদেষ্টা

ধর্মের অপব্যাখ্যা করে বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ কাউকে দেয়া হবে না: ধর্ম উপদেষ্টা

কীর্তনখোলা নদীর তীরে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক চরমোনাই বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।

বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, বরিশাল: ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ধর্মের অপব্যাখ্যা করে দেশে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ধর্মের বিষয়ে একমাত্র হক্কানি আলেম-ওলামাদের ব্যাখ্যাই গ্রহণযোগ্য, কোনো অপব্যাখ্যা রাষ্ট্র গ্রহণ করবে না।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে বরিশালের কীর্তনখোলা নদীর তীরে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক চরমোনাই বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আইন হাতে তুলে না নেওয়ার আহ্বান
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আপনারা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন, বিভিন্ন সময়ে যারা আল্লাহ, রাসুল (সা.) ও ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছে, আমরা যথাদ্রুত সম্ভব তাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। আগামীতেও যদি বাংলার মাটিতে কেউ আল্লাহ, রাসূল ও কোরআন নিয়ে কটূক্তি করে, তাদেরকে কঠোর আইনের মুখোমুখি হতে হবে।’’

তবে তিনি সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে বলেন, ‘‘আমরা কোনোক্রমেই আইন নিজের হাতে তুলে নেব না। আইন হাতে তুলে নিলে সমাজে সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। আইনকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। কেউ অন্যায় করলে বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিলে তার বিচারের জন্য প্রশাসন রয়েছে।’’ তিনি সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানান।

আলেমদের অবদানের স্বীকৃতি
আলেম সমাজের ভূমিকার প্রশংসা করে ড. খালিদ বলেন, ‘‘আলেম-ওলামা, পীর ও মাশায়েখরা শত শত বছর ধরে ইসলামি ভাবধারার জাগরণ ও মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন। তাদের এই মেহনত অতীতেও ব্যর্থ হয়নি, আগামীতেও হবে না।’’

চরমোনাই মাহফিলের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘‘আমি বহুবার এই ময়দানে এসেছি। এখানে মানুষ আসে দ্বীনের খোরাকের জন্য। এখানে কোনো শিরক বা বেদাত নেই, বরং সুন্নতের ওপর আমল করা হয়। এদেশের মানুষ সত্যিকার ইসলামকে জানতে ও মানতে চায়, তাদের অন্তরে আল্লাহভীতি রয়েছে।’’

ঐক্য ও কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের ডাক
দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘‘৫৪ বছর পর একটি বিশেষ সুযোগ এসেছে। এমন সুযোগ বারবার আসে না। একে অন্যের হাত ধরুন, সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন। খোলাফায়ে রাশেদীনের আদলে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবাইকে একতাবদ্ধ হতে হবে।’’ তিনি একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান।

অন্যান্য কর্মসূচি
চরমোনাই দরবার শরীফের পীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ড অব গর্ভনরসের সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ মাদানী, ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি রেজাউল করিম আবরারসহ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

এর আগে সকালে উপদেষ্টা চরমোনাই মাদরাসা সভাকক্ষে বরিশাল বিভাগের ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।