Home আন্তর্জাতিক ইংল্যান্ডের প্রথম নারী আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবেরি হচ্ছেন সারা মুলালি

ইংল্যান্ডের প্রথম নারী আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবেরি হচ্ছেন সারা মুলালি

সারা মুলালি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:ইংল্যান্ড সরকার সারা মুলালিকে চার্চ অব ইংল্যান্ডের আর্চবিশপ অব ক্যান্টারবেরি হিসেবে মনোনীত করেছে। এর ফলে ৫০০ বছরের পুরুষপ্রধান নেতৃত্বের ইতিহাস ভেঙে প্রথমবারের মতো একজন নারী এই পদে আসীন হতে যাচ্ছেন। রাজা তৃতীয় চার্লসও তাঁর নিয়োগ অনুমোদন দিয়েছেন। তিনি বর্তমান আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবির স্থলাভিষিক্ত হবেন, যিনি নির্যাতন কেলেঙ্কারির জেরে পদত্যাগ করেছিলেন।

সারা মুলালির এই নিয়োগ কেবল চার্চের জন্য নয়, সমগ্র অ্যাংলিকান কমিউনিটির জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ পদকে খ্রিস্টান বিশ্বের অন্যতম আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। তাই একজন নারী হিসেবে এই দায়িত্ব গ্রহণ সামাজিক, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক দিক থেকে গভীর তাৎপর্য বহন করছে।

পেশাগত জীবন থেকে আধ্যাত্মিক নেতৃত্বে

১৯৬২ সালে সারের উকিং-এ জন্ম নেওয়া সারা শুরুর দিকে নার্স হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। চিকিৎসা খাতে অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়ে ১৯৯৯ সালে তিনি ইংল্যান্ডের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ চিফ নার্সিং অফিসার হিসেবে নিযুক্ত হন। স্বাস্থ্যসেবায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৫ সালে তিনি পান ডেম কমান্ডার অব দ্য অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (DBE) খেতাব।

তবে মানবসেবার পাশাপাশি আধ্যাত্মিক টান তাঁকে নিয়ে যায় ধর্মীয় নেতৃত্বের দিকে। ২০০১ সালে তিনি পুরোহিত হিসেবে অভিষিক্ত হন। অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই চার্চ অব ইংল্যান্ডে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হন—২০১৫ সালে ক্রেডিটনের বিশপ এবং ২০১৮ সালে লন্ডনের বিশপ। লন্ডনের বিশপ পদটি চার্চের তৃতীয় সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পদ। সেখান থেকে তিনি লিঙ্গসমতা, সামাজিক ন্যায়বিচার, দারিদ্র্য বিমোচন ও এলজিবিটিকিউ অধিকারের পক্ষে স্পষ্ট অবস্থান নেন।

সামনে চ্যালেঞ্জ

সারা মুলালির সামনে চার্চের নানা বিতর্কিত বিষয় সামলানোর চ্যালেঞ্জ রয়েছে—

সমলিঙ্গ বিবাহের স্বীকৃতি

চার্চে লিঙ্গসমতা

আধুনিকতার সঙ্গে ঐতিহ্যের সমন্বয়

বহুধর্মীয় সমাজে খ্রিস্টান চার্চের ভূমিকা

তাঁর নেতৃত্ব থেকে আশা করা হচ্ছে, তিনি একদিকে ঐতিহ্য রক্ষা করবেন, অন্যদিকে পরিবর্তনের দাবিগুলিকেও গুরুত্ব দেবেন।

প্রতীকী বার্তা

সারা মুলালির নিয়োগ কেবল চার্চ নেতৃত্ব নয়, বরং নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক ন্যায়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে। তাঁর জীবনপথ দেখিয়েছে—পেশাগত সাফল্য, মানবসেবা ও আধ্যাত্মিকতা একসঙ্গে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।

তাঁর নেতৃত্বে চার্চ অব ইংল্যান্ডের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সূচিত হবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।