বিজনেসটুডে২৪ প্রতিনিধি, ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন যে, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হলে নির্বাচন কাদেরকে নিয়ে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তিনি মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও উল্লেখ করেন, যদি দল নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন হয়, তবে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে ২৮টি দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা উচিত। তিনি ধারণা করেন, যারা রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার দাবি করছেন, তাদের পেছনের উদ্দেশ্য ভিন্ন হতে পারে, সম্ভবত তারা নিজেদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা তৈরি করতে চাইছেন।
আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য দায়ী। তিনি উল্লেখ করেন যে, প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি এবং দোসরদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ সতর্ক করে দেন যে, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে একটি সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হতে পারে। এই শূন্যতা জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করবে এবং ফ্যাসিবাদ, আঞ্চলিক শক্তি ও বৈশ্বিক শক্তিকে জড়িত হওয়ার সুযোগ দেবে, যা জাতীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
তিনি জানান যে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে এবং আরও হবে। তিনি আরও বলেন যে, বিএনপি সর্বপ্রথম গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার দাবি করেছিল, এবং আদালতই নির্ধারণ করবে তারা রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না। একই প্রক্রিয়ায় অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাও আদালতে উত্থাপন করা যেতে পারে, কারণ আইন সংশোধিত হয়েছে।
আলোচনা প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, তারা এমন কোনো প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করবেন না, যেমন “স্পেশাল কনস্টিটিউশনাল অর্ডার” বা “এক্সট্রা কনস্টিটিউশনাল অর্ডার”, যা বিদ্যমান সংবিধান বহাল থাকা সত্ত্বেও অনুমোদিত হবে। কারণ এটি একটি খারাপ নজির স্থাপন করবে এবং ভবিষ্যতে অরাজকতা সৃষ্টি করতে পারে।
তিনি বর্তমান সরকারকে আহ্বান জানান সংবিধান সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো (যা সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই) এখনই বাস্তবায়ন করতে। তবে, সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন এমন প্রস্তাবগুলো (যেগুলোতে তারা নোট অফ ডিসেন্টসহ একমত) জাতীয় সংসদেই একমাত্র উপযুক্ত ফোরাম হিসেবে গ্রহণ করা উচিত।
তিনি নিজস্ব, ব্যক্তিগত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান, যেখানে ছোট ছোট মিটিং করে দলসমূহের সঙ্গে আলাপ করে একটি উপায় বের করা যায়। দ্বিতীয়ত, তিনি সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত নেওয়ার কথা বলেছেন যে, সংবিধানের সংশোধনীগুলো জাতীয় সংসদ ছাড়া অন্য কোনোভাবে এখনই করার কোনো উপায় আছে কি না। তৃতীয়ত, তিনি বলেছেন যে আলোচনার মধ্য দিয়ে যদি এমন কোনো বৈধ পন্থা বের হয় যা ইতিহাসে খারাপ নজির স্থাপন করবে না এবং ভবিষ্যতে জাতীয় সংকট সৃষ্টি করবে না, সেই পন্থাও অবলম্বন করা যেতে পারে। এই আলোচনা অব্যাহত আছে।










