Home First Lead হাসিনার শাসনামলে ২৫ লাখ কোটি টাকা পাচার, ফিনান্সিয়াল টাইমসের ডকুমেন্টারি

হাসিনার শাসনামলে ২৫ লাখ কোটি টাকা পাচার, ফিনান্সিয়াল টাইমসের ডকুমেন্টারি

বিজনেসটুডে২৪ ডেস্ক: ব্রিটিশ প্রভাবশালী দৈনিক ফিনান্সিয়াল টাইমস (FT)–এর নতুন অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত ডকুমেন্টারি ‘Bangladesh’s Missing Billions: Stolen in Plain Sight’–এ দাবি করা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৫ লাখ কোটি টাকা, অবৈধভাবে পাচার হয়েছে।

ডকুমেন্টারিতে বলা হয়েছে, হাসিনা সরকারের ১৫ বছরে গড়ে প্রতি বছর প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার দেশ থেকে পাচার হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে ওভার-ইনভয়েসিং ও আন্ডার-ইনভয়েসিং, অর্থাৎ আমদানি-রপ্তানি পণ্যের প্রকৃত দামের চেয়ে বেশি বা কম দেখিয়ে টাকা বিদেশে পাঠানো। পাশাপাশি হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর এবং যুক্তরাজ্যের রিয়েল এস্টেট খাতে বিপুল বিনিয়োগকেও প্রধান মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ফিনান্সিয়াল টাইমস জানায়, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের অর্থ পাচারের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়। লন্ডনের আর্থিক খাত ও রিয়েল এস্টেট বাজারে বিপুল অর্থ লগ্নি করা হয়। রিপোর্টে শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা ও মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক–এর নামও উঠে এসেছে। যদিও এই বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী। ডকুমেন্টারিতে দাবি করা হয়, দুর্নীতির অভিযোগে এক মামলার পর তাকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়, যা এখনো বিচারাধীন।

এছাড়া, নেপথ্যে ভূমিকা রাখা আরও কয়েকজনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। যেমন, যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী–এর নামে প্রায় ৩০০টির বেশি সম্পত্তি থাকার কথা বলা হয়েছে। ব্রিটিশ অপরাধ দমন সংস্থা (SCA) ইতোমধ্যে এর মধ্যে প্রায় ৩৫০টি সম্পত্তি জব্দ করেছে বলে ডকুমেন্টারিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, হাসিনা সরকারের সময়ে সেনা গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় ব্যাংকগুলো নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। অস্ত্রের মুখে পরিচালক বদলিয়ে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ চলছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এত বড় অঙ্ক ফেরত আনা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়, যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও বৈশ্বিক সহযোগিতা নিশ্চিত হয়। অন্যদিকে সরকারপন্থি মহল এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করছে।